Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 11:21 am

ফেসভ্যালুতে ফিরে দর বৃদ্ধির চমক দেখাচ্ছে চার ব্যাংক

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: পুঁজিবাজারে ব্যাংকিং খাত এখন চাঙা হয়ে উঠেছে। এই চাঙার মৌসুমে আবার মূল স্রোতে ফিরে এসেছে তলানিতে পড়ে থাকা চার ব্যাংকের শেয়ার। এই ব্যাংক চারটি হচ্ছে ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক। এক বছর আগেও এই ব্যাংকগুলোর শেয়ারদর অভিহিত মূল্যের নিচে অবস্থান করছিল। ফলে বিনিয়োগকারীদেরও আগ্রহ ছিল না এসব  ব্যাংকের  শেয়ারে। কিন্তু ব্যাংকিং  খাত  চাঙা  হওয়ায় এসব শেয়ারের দর এখন হু হু করে বাড়ছে। কারও  কারও  মতে, অতি মূল্যায়িত হয়ে পড়ছে এসব শেয়ার। তবে অতি মূল্যায়িত হলেও  শেয়ার লেনদেনে প্রায় শতভাগ মুনাফা অর্জন করছেন বিনিয়োগকারীরা।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, এক বছর আগে ব্যাংকিং খাতের এসব প্রতিষ্ঠানের সবগুলোর শেয়ারের দর ছিল অভিহিত দরের নিচে। তখন তালিকাভুক্ত ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের দর ছিল ৯ টাকা ৮০ পয়সা। একই সময়ের মধ্যে ৯ টাকা ৯০ পয়সা করে লেনদেন হয় এনসিসি ব্যাংকের শেয়ার। এছাড়া স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের শেয়ারের দর ৯ টাকা ৭০ পয়সা এবং এক্সিম ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি করা হয় ৯ টাকা ১০ পয়সায়। বর্তমানে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ার কেনাচেবা হচ্ছে ১৮ টাকা থেকে ১৯ টাকার মধ্যে। এক বছরের ব্যবধানে এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি শেয়ারের দর বেড়েছে প্রায় ৯৩ শতাংশ। একই সময়ের এক্সিম ব্যাংকের শেয়ারের বিনিয়োগকারীদের মুনাফা বা ক্যাপিটাল গেইন হয়েছে ১১১ শতাংশ। সর্বশেষ কার্যদিবসে এ শেয়ার লেনদেন হয় ১৯ টাকা ২০ পয়সায়। তালিকায় থাকা অন্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বছরের ব্যবধানে এনসিসি ব্যাকের শেয়ারে মুনাফা হয়েছে ৯৭ শতাংশ। বর্তমানে এ শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ১৯ টাকা ৫০ পয়সায়। আর স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের শেয়ারে এক বছরে মুনাফা হয়েছে ৭৫ শতাংশ। গতকাল এ শেয়ার লেনদেন হয় ১৬ টাকা ৯০ পয়সায়।

এদিকে প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) বিনিয়োগের অনুক‚লে থাকলেও দর বৃদ্ধি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। পিই রেশিও বিনিয়োগের অনুক‚লে থাকলেও দর বৃদ্ধির দৌড়ে এসব শেয়ার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে বলে মনে করেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।

জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসইর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘পিই রেশিও কিংবা ব্যাকরণগতভাবে এসব শেয়ার অতিমূল্যায়িত না হলেও এক বছরের ব্যবধানে এর দর যেভাবে বেড়েছে, তাতে এসব শেয়ার অতি মূল্যায়িতই বলা যায়।’

এদিকে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংকিং খাত পুঁজিবাজারের একটি শক্ত খাত। বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ২০১০ সালের পর থেকে এই খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যায়। এ কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দরও অস্বাভাবিক হারে কমে যায়। কিন্তু এখন সেই পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। সেজন্য হয়তো এ খাতে ঝুঁকেছেন বিনিয়োগকারীরা। এর ফলে শেয়ারের দরও বেড়েছে।’

অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হায়দার আলী মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।