Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 1:03 pm

ফোরজি সেবায় পিছিয়ে টেলিটক ও বাংলালিংক

হামিদুর রহমান: দেশে ফাইভজি সেবার প্রস্তুতি চললেও দেশব্যাপী গ্রাহকরা এখনও প্রকৃত ফোরজি সেবা থেকে বঞ্চিত। রাজধানীসহ দেশের বিভাগীয় শহরগুলোয় গ্রাহকরা ফোরজির মোটামুটি সেবা পেলেও মফস্বলের অনেক গ্রামে পৌঁছায়নি ফোরজি সেবা। কেবল তা-ই নয়, অনেক গ্রাম আছে যেখানে নিশ্চিন্তে ভয়েস কলে কথা বলারও সুযোগ নেই।

যদিও দেশে যাত্রা শুরুর পর থেকে গ্রামীণফোন এখনও নেটওয়ার্ক কাভারেজ ও গ্রাহকসংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে।

মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর তথ্যমতে, ফোরজি নেটওয়ার্ক কাভারেজে শীর্ষে গ্রামীণফোন। প্রতিষ্ঠানটির দেশব্যাপী ফোরজি সাইট চালু আছে প্রায় ১৮ হাজার ২৩টি। আর দেশব্যাপী বিটিএস (বেস ট্রান্সমিশন স্টেশন) রয়েছে প্রায় ১৮ হাজার ২৩টির মতো। এদিকে নেটওয়ার্ক কাভারেজে ফোরজি সাইট চালুতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রবি আজিয়াটা। অপারেটরটির দেশব্যাপী ফোরজি সাইট রয়েছে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজারের মতো। আর বিটিএস চালু রয়েছে প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি।

এদিকে ফোরজি কাভারেজে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক। এর পরই রয়েছে বেসরকারি মালিকানাধীন বাংলালিংক। বর্তমানে দেশব্যাপী বাংলালিংকের ফোরজি সাইট চালু রয়েছে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার আর বিটিএস চালু রয়েছে প্রায় একই সমান, অর্থাৎ সাড়ে ১০ হাজার। অন্যদিকে ফোরজি সাইট চালুতে সবচেয়ে পিয়িছে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক। অপারেটরটির ফোরজি সাইট চালু রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ও বিটিএস চালু রয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার ৭০০টি। 

বিটিআরসির সর্বশেষ তথ্যমতে, চলতি বছর সেপ্টেম্বরে এসে গ্রামীণফোনের গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় আট কোটি ৩৭ লাখ। একই সময়ে রবি আজিয়াটার গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় পাঁচ কোটি ৩০ লাখ। বাংলালিংকের তিন কোটি ৭০ লাখ ও টেলিটকের গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৪ লাখ। আর গত ডিসেম্বরে গ্রামীণফোনের গ্রাহক ছিল সাত কোটি ৯০ লাখ। এ সময় রবি আজিয়াটার গ্রাহক ছিল পাঁচ কোটি ৯ লাখ এবং বাংলালিংকের তিন কোটি ৫২ লাখ। আর টেলিটকের গ্রাহক ছিল ৪৯ লাখ ২৭ হাজার।

বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তৈমুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, ‘আমরা ফাইভজিতে যাওয়ার আগে ফোরজি সেবা আরও বেশি উন্নত করতে কাজ করছি। পর্যায়ক্রমে আমাদের ফোরজির সেন্টার ও বিটিএস বাড়ানো হচ্ছে। আশা করছি গ্রাহকদের আমরা আরও বেশি বেশি সেবা প্রদান করতে পারব।

উল্লেখ্য, সরকার ফাইভজির প্রস্তুতি নিচ্ছে, ডিসেম্বর নাগাদ টেলিটক ফাইভজিতে যাচ্ছে, অথচ তাদের থ্রিজি বা ফোরজি সেবা যথেষ্ট নয়। এটি কেবল টেলিটকেই নয় অন্যান্য অপারেটরেরও একই সমস্যা। গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ট বরাবরই অন্যদের চেয়ে কিছুটা ভালো থাকলেও প্রকৃত ফোরজি সেবা দিতে সব অপারেটরই ব্যর্থ। তাই ফাইভজির আগে ফোরজি উন্নতকরণে সরকার ও অপারেটরগুলোর আরও কাজ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিন শেয়ার বিজকে বলেন, ‘আগামী ১২ ডিসেম্বর ঢাকার ছয়টি স্থানে ফাইভজির পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হবে। বাণিজ্যিকভাবে গ্রাহকদের জন্য ২০২২ সালের মধ্যে ঢাকায় ২০০টি স্থানে এ সেবা চালু করা হবে। পর্যায়ক্রমে তা ঢাকাসহ অন্যান্য স্থানে বিস্তৃত করা হবে। 

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা আগের চেয়ে ভালো, গ্রাহকও বাড়ছে। কিছু এলাকায় বা কিছু কিছু সময় একটু নেটওয়ার্ক স্লো থাকে। এটি সব অপারেটরেরই হয়। আমরা দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করতে এবং অন্য অপারেটরগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে নতুন করে টাওয়ার নির্মাণের জন্য কাজ করছি। একনেক থেকেও নতুন টাওয়ার নির্মাণ প্রজেক্টের জন্য টেলিটক সাড়া পেয়েছে। আমরা দেশের দুর্গম এলাকাগুলোয় আরও ৪০০টির মতো বিটিএস (বেজ ট্রান্সমিশন স্টেশনস) স্থাপন করব। যদিও এটা আরও আগে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। করোনাকালে সবকিছু অফ থাকায় ডিলে হয়েছে। এখন পুরোদমে কাজ চলছে।’