ফ্রান্সে করোনার নতুন ধরন শনাক্ত, বিবর্তন হয়েছে ৪৬ বার

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলে করোনাভাইরাসের নতুন একটি ধরন শনাক্ত হয়েছে। বি.১.৬০৪.২ নামের এই ধরনটিকে আইএইচইউ বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, নতুন এই ধরনের কারণে ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলে সংক্রমণের ঘটছে।

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্রান্সের আইএইচইউ মেডিটেরান ইনফেকশন ইন্সটিটিউটের গবেষকরা এই ধরনটি শনাক্ত করেছেন বলে এর নামকরণ করা হয়েছে ‘আইএইচইউ’ বা ‘ইহু’ হিসেবে। দেশটির অন্তত ১২ জন ব্যক্তি করোনার নতুন এই ধরনের আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিরা সবাই আফ্রিকার দেশ ক্যামেরুন ফেরত বা সেই দেশ থেকে আসা ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন।

নতুন শনাক্ত হওয়া এই ধরনটির বৈজ্ঞানিক নাম বি.১,৬৪০.২। ফ্রান্সের জীবাণু গবেষণা সংস্থা আইএইচইউ মেডিটেরানির নাম অনুসারে এটির নামকরণ হয়েছে। ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের বার্তাসংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই)।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলে এক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রথম এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগী হিসেবে শনাক্ত হন।

দেহে করোনার উপসর্গ বোধ করায় স্থানীয় একটি ল্যাবে আরটিপিসিআর টেস্ট করিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। টেস্টের জন্য যে নমুনা তিনি দিয়েছিলেন, সেখানেই ধরা পড়ে ভাইরাসটির উপস্থিতি।

পরে আরও বিস্তারিত অনুসন্ধান ও গবেষণায় করোনাভাইরাসের নতুন এই ধরনটি সম্পর্কে নিশ্চিত হয় আইএইচইউ মেডিটেরানি। এ বিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদনে সংস্থটির বিজ্ঞানীরা জানান, মূল করোনাভাইরাসের ৪৬ দফা অভিযোজন বা রূপান্তরের মাধ্যমে আগমন ঘটেছে নতুন এই ভাইরাসটির।

এই ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিন বা শুঁড়ের মতো দেখতে প্রত্যঙ্গগুলো মূল করোনাভাইরাস থেকে ভিন্ন; তবে ভাইরাসটির রূপান্তরিত ৪ ধরন- গ্যামা, বিটা, থিটা ও ওমিক্রনের সঙ্গে সাদৃশ্য আছে আইএইচইউয়ের স্পাইক প্রোটিনের।

স্পাইক প্রোটিন করোনাভাইরাসের খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যঙ্গ। এটির মাধ্যমেই এই ভাইরাসটি মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীদেহে আটকে থাকে এবং একসময় কোষের ভেতরে ঢুকে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম শুরু করে।

বাজারে যেসব করোনা টিকা পাওয়া যায়, সেগুলোর মূল কাজ হলো ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন ধ্বংস বা নিষ্ক্রিয় করা।

তবে এই ধরন কতটা সংক্রামক এবং এই ধরনের বিরুদ্ধে প্রচলিত করোনাভাইরাস টিকা কতটুকু কার্যকর, তা এখনই বলা ঠিক হবে না বলে মনে করেন গবেষকরা। গত ২৯ ডিসেম্বর মেডআরএক্সআইভি সাময়িকীতে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। তবে এটি এখনো কোনো পিয়ার-রিভিউড জার্নালে প্রকাশিত হয়নি।

গবেষণায় বলা হয়, এই ধরনটির ৪৬ বার বিবর্তন হয়েছে এবং ৩০টি অ্যামিনো অ্যাসিডে ৩৭ বার ডিলিটেশনের পর ১২টি মুছে ফেলেছে। অ্যামিনো অ্যাসিডগুলোকে প্রায়ই প্রোটিনের বিল্ডিং ব্লক হিসেবে বর্ণনা করা হয় । কারণ এটি আপনার দেহের প্রতিটি প্রোটিনের অবিচ্ছেদ্য গঠনগত একক।

অ্যামিনো অ্যাসিডগুলো মানবদেহে পেশী বৃদ্ধিতে, উদ্দীপনা এবং কোলাজেন এবং ইলাস্টিন তৈরি করতে, নিউরোট্রান্সমিটার তৈরি করতে সাহায্য করে। বিপাক সঠিকভাবে কাজ করতে অ্যামিনো অ্যাসিডের ওপর নির্ভর করে। এগুলো ব্যতীত কেউ খাবার হজম করতে এবং শক্তির জন্য ব্যবহার করতে পারবেন না।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০