নিজস্ব প্রতিবেদক: গত মার্চে রাজধানীর মালিবাগে নির্মাণাধীন মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভারের গার্ডার ভেঙে হতাহত তিনজনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। তিন পরিবারকে এক কোটি ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিটে।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান প্রকৌশলী, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী, ফ্লাইওভার নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও রমনা থানার ওসিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ১৩ মার্চ রাজধানীর মালিবাগ রেলগেট এলাকায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের গার্ডার পড়ে স্বপন মিয়া নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনায় আহত হন পলাশ ও নূর নবী নামে দুই ব্যক্তি। সে সময় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। এরপর গত ৩ জুন মানবাধিকার সংগঠন চিলড্রেনস চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পক্ষে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন হয়। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল হালিম।
আবদুল হালিম সাংবাদিকদের বলেন, ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি জনগণের নিরাপত্তা দিতে সরকারের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে নাÑতাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
তিনি বলেন, মৃত ফ্লাইওভারের শ্রমিক স্বপন মিয়ার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়টি দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতকে জানাতে রমনা থানার ওসিকে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আবদুল হালিম বলেন, জনগণের নিরাপত্তা দিতে সরকার আইনগতভাবে
বাধ্য। কিন্তু এই ফ্লাইওভার নির্মাণে জনগণের যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এখানে সরকারের অবহেলা ছিল। এজন্য আদালত নিহত স্বপন মিয়ার পরিবারকে ৫০ লাখ ও আহত অপর দুজনের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে দিতে রুল জারি করেছেন।
আইনজীবী আবদুল হালিম আরও জানান, এর আগে রাজধানীর শ্যামপুরে নালায় পড়ে শিশু ইসমাইল হোসেন নীরবের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রুল দিয়েছিলেন আদালত। তাছাড়া রাজধানীর পল্টনে কালভার্ট রোডে খোলা ম্যানহোলে পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায়ও ক্ষতিপূরণ হিসেবে এ রকম কাছাকাছি একটা পরিমাণ ধরা হয়েছিল। সে কারণেই এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে নিহত ব্যক্তির পরিবারকে ৫০ লাখ ও আহতদের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে দিতে আর্জি জানানো হয়েছিল।