Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 10:25 pm

বইমেলার পর্দা উঠছে আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিডের কারণে দুই সপ্তাহ পিছিয়ে আজ শুরু হচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলার ৩৮তম আসর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলা ৩টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বইমেলার উদ্বোধন করবেন।

গতকাল একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ বলেন, এবারের মেলা চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে সংক্রমণের হার কমলে বইমেলার সময় বাড়তে পারে। মহামারির কারণে এক সময় মনে হয়েছিল এবার হয়তো বইমেলা করতেই পারব না। প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক নির্দেশনায় আশা করছি আগামীকাল (আজ) বেলা ৩টায় বইমেলার পর্দা ওঠবে।

কভিডের কারণে এবার বইমেলায় সময় অর্ধেক কমিয়ে আনা হয়েছে। ১৫ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত মেলা চলবে। সংক্রমণ কমলে মেলার সময় কিছুটা হলেও বাড়াতে পারব। সংক্রমণ যেভাবে কমছে, এ ধারা যদি অব্যাহত থাকে, আমরা বিশ্বাস করি, মেলার সময়সীমা খানিকটা বাড়াতে পারব। সে জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।

প্রতি বছর ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন একুশে গ্রন্থমেলা শুরুর কথা থাকলেও, মহামারির কারণে গত বছর দেড় মাস পিছিয়ে ১৮ মার্চ মেলা শুরু হয় এবং নির্ধারিত সময়ের দুদিন আগে ১২ এপ্রিল তা শেষ হয়ে যায়। মাঝে কিছুদিন সংক্রমণ কম থাকলেও এ বছরের শুরুতে তা আবার বাড়তে শুরু করে। ফলে এবারও পিছিয়ে যায় বইমেলা।

এবারের বইমেলার মূল প্রতিপাদ্যÑজাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জš§শতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। এছাড়া এ বছর ভাষা আন্দোলনের সত্তর বছর পূর্তি এবং একইসঙ্গে সংবিধান প্রণয়নের পঞ্চাশ বছর পূর্তির তাৎপর্যকে ধারণ করবে বইমেলা।

একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, ভাষা আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও সংবিধানপ্রাপ্তির এই বিশেষ সময়ে বাঙালিত্বের চেতনা-জাগানিয়া বইমেলার আয়োজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ভাষা আন্দোলনের সত্তর বছর, সংবিধান প্রণয়নের পঞ্চাশ বছর, বাংলাদেশের পঞ্চাশÑ এমন ক্ষণে দাঁড়িয়ে অনেক দোষত্রুটি সত্ত্বেও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

মেলার প্রস্তুতি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্টল প্যাভিলিয়নের কাজ আজকের মধ্যেই শেষ হবো, আশা করছি কাল সকালের মধ্যে বই তুলতে পারবে। অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও মেলার অগ্রগতি হবে।’ সংবাদ সম্মেলনে বইমেলার সার্বিক তথ্য তুলে ধরেন বইমেলার সদস্য সচিব এবং বাংলা একাডেমির পরিচালক জালাল আহমেদ।

তিনি জানান, এবার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ৭ লাখ বর্গফুট জায়গাজুড়ে এবার বইমেলা হবে। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৪২টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩২টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৩৪টি ইউনিট; মোট ৫৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৭৬টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মেলায় ৩৫টি প্যাভিলিয়ন থাকবে। বাংলা একাডেমির ৩টি প্যাভিলিয়ন, শিশুকিশোর উপযোগী বইয়ের জন্য একটি এবং সাহিত্য মাসিক উত্তরাধিকারের একটি স্টল থাকবে। এবারও শিশুচত্বর মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে। তবে কভিড পরিস্থিতির কারণে প্রথম দিকে ‘শিশুপ্রহর’ হবে না। এবার লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এম্ফিথিয়েটারের পূর্বদিকে, মেলার মূল প্রাঙ্গণে। সেখানে ১২৭টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এবারের গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমি প্রকাশ করছে নতুন ও পুনর্মুদ্রিত ১০৭টি বই। বইমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে।