Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 12:43 pm

বকেয়া বেতন না দিয়েই ক্রোনি অ্যাপারেলসের ৫৮ জনকে ছাঁটাই

 

প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ক্রোনি অ্যাপারেলস কারখানায় বকেয়া বেতন পরিশোধ না করেই ছাঁটাই করার ঘটনা ঘটেছে। প্রায় ৫৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চলতি মাসের বেতন দিয়ে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাশিপুর হাটখোলা এলাকায় অবস্থিত কারখানাটির সামনে অবস্থান নেন। প্রায় ৩ ঘণ্টা অবস্থানের পরও বকেয়া বেতনসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে সমাধান না পাওয়ায় ফিরে যান তারা।

ক্রোনি অ্যাপারেলসের সিনিয়র অফিসার আফাজ হোসেন বলেন, ‘গতকাল আমাদের ৫৮ জনকে ছাঁটাই করে ছবিসহ গেটে টানিয়ে দেয়া হয়েছে। আমাদের চারজনকে আলাদা আলাদা করে ডেকে নিয়ে একেকজনকে একেকভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে। অন্যদের রেখে আমরা তো এভাবে ম্যানেজ হবো না। আমরা জানি, আমাদেরও কিছুদিন পর আবারও লাথি মেরে বের করে দেবে। তারা চাচ্ছে, ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বেতন দিয়ে বাদ দেবে। কিন্তু আমরা যাবতীয় বকেয়া বেতন বুঝে পেয়েছি, এই মর্মে স্বাক্ষর রাখতে চায়। সব শ্রমিক ফতুল্লা থানায় এসেছি অভিযোগ দায়ের করতে।’

তিনি বলেন, ‘গত ৩ মাস কীভাবে আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। বাড়িওয়ালা প্রতিনিয়ত ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছে, মহল্লার দোকানে হাজার হাজার টাকা বাকি জমে গেছে। এমন অবস্থায় অমানবিকের মতো মালিকপক্ষ আমাদের ছাঁটাই করেছে। সমাধান না পেলে আমরা শ্রম আদালতে যাব।’

কারখানার আরেক কর্মী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের রুলস হচ্ছে কাউকে চাকরিচ্যুত করতে হলে তাকে তিন মাসের বেতন দিতে হবে। আমরা এখানে একেকজন ৮ থেকে ১০ বছর কাজ করছি। গত ৩ মাস কেবল হরতাল, অবরোধ, নির্বাচন ইত্যাদির অজুহাত দিয়ে বেতন দেয়নি। এখন বেতন ছাড়াই ছাঁটাই করেছে তারা।’

একই বিষয়ে ক্রোনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসলাম সানী বলেন, ‘আমরা তাদের দেনা-পাওনা পরিশোধ করব। কারখানায় মানুষ বেশি হয়ে গেলে একটু অ্যাডজাস্টমেন্ট করতে হয়। তাদের দেনা-পাওনা হিসাব করছি, দ্রুতই অ্যাকাউন্টে দিয়ে দেব। তাদের বলা হয়েছে, চলতি মাসের বেতন নিয়ে যেতে। পরবর্তী সময়ে বাকি বেতনগুলো পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করা হবে।’

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম মিয়া বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা নেব।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ ডিসেম্বর ক্রোনি গ্রুপের ‘ক্রোনি টেক্স সোয়েটার লিমিটেড’ কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হয়। এতে প্রায় ৮০০ শ্রমিক চাকরিচ্যুত হন। পরবর্তী সময়ে চলতি মাসের ৮ ফেব্রুয়ারি একই গ্রুপের ‘অবন্তি কালার টেক্স লিমিটেড’-এর শ্রমিকরা দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।