পারভীন লুনা, বগুড়া: নবান্নের আনন্দে ধান কাটার ধুম লেগেছে বগুড়ায়। জেলাজুড়ে রোপা আমন ধান কাটা আর মাড়াই-ঝাড়াই চলছে পুরোদমে। মাঠে ফলানো সোনালি আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চলতি বছর আমন চাষে প্রতিকূল আবহাওয়া মোকাবিলা করতে হয়েছে কৃষকদের। কিন্তু বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় নির্বিঘেœ ধান কাটা, মাড়াই-ঝাড়াই ও শুকানোর কাজ করতে পারছেন কৃষক-কিষাণিরা। দিনভর কাজ করছেন মাঠে, ঘরে তুলছেন সোনালি ফসল।
সরেজমিনে ধুনট উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, কৃষক-কিষাণিদের আমন ধান কাটা ও মাড়াই কাজে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। কৃষক ধান কেটে আঁটি বেঁধে বিভিন্ন ধরনের বাহনে করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। বাড়ির আঙিনায় চলছে আমন ধান মাড়াইয়ের কাজ। এসব নতুন ধান নিয়ে কৃষকের যেমন ব্যস্ততা রয়েছে, তেমনি আনন্দও রয়েছে গ্রামের মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোয়।
ধুনট উপজলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে এ উপজলায় প্রায় ৪৫ হাজার কৃষক ১৫ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করেছেন। এর মধ্য কয়েক দফা বন্যায় ও অতিবৃষ্টিতে নিন্মাঞ্চলের ধান ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হয়। এর ফলে ৯০ হেক্টর জমির আমন ধান নষ্ট হয়ে যায়। এরপরও কৃষক অতিবৃষ্টি এবং অতি গরমের মতো আবহাওয়ার প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেই ফলিয়েছেন সোনার ফসল।
এদিকে প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও এ বছর ধানের ভালো ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। মূলত অগ্রহায়ণে পুরাদমে আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করবেন তারা। তবে এ উপজেলায় কৃষকরা চলতি কার্তিকের মাঝামাঝি থেকে আমন ধান কাটা শুরু করেছেন।
উপজেলার মাঠপাড়া গ্রামের কৃষক বেলাল শেখ বলেন, ‘এ বছর অবহাওয়া ধান চাষে খুব ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। তারপরও ধানের ফলন ভালো হয়েছে।’ অপর কৃষক স্বপন মিয়া জানান, ধান কাটার পর ওই জমিতেই সবজি চাষ শুরু করবেন তিনি।
এ বিষয়ে ধুনট উপজলা কৃষি কর্মকর্তা মহিদুল হক বলেন, চলতি মৌসুমে ধুনট উপজলায় প্রায় ৫২ হাজার মেট্রিক টন আমন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষক ধান কাটতে শুরু করেছেন। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে কৃষক আমন ধান চাষ করেছেন। আর কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছেন।’ সব মিলিয়ে কৃষক এবার ভালো ফলন পেয়ে খুশি বলে জানান তিনি।