বগুড়ায় পুলিশ ফাঁড়ি থেকে জব্দ করা রিকশার ব্যাটারি চুরি

 

 

প্রতিনিধি, বগুড়া: পুলিশের জব্দ করা অটোরিকশার ব্যাটারিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম প্রতিনিয়ত চুরি হচ্ছে বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়ি থেকে। অথচ পুলিশ ফাঁড়ির নিরাপত্তার জন্য রয়েছে চারদিকে উঁচু ইটের দেয়ালের ওপর তারকাঁটার বেষ্টনী। এছাড়া রয়েছে ছয়টি সিসিটিভি ক্যামেরা। পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাটারি চুরির বিষয়টি স্বীকার করে বলা হয়েছে রিকশার চালকরাই এসব চুরির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু রিকশা চালকদের প্রশ্নÑএত নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে কীভাবে প্রতিনিয়ত ব্যাটারি চুরি হচ্ছে, তার দায় কার? ব্যাটারি চুরির অভিযোগ করতে গেলে গালাগাল করে ফাঁড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়।

বগুড়া শহরের নবাববাড়ী সড়কে একই ভবনে সদর পুলিশ ফাঁড়ি ও সদর ট্রাফিক পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

বগুড়া শহরের নিশিন্দারা চারমাথা এলাকার অটোরিকশা চালক সাব্বির হোসেন বলেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারি শহরের সাতমাথা থেকে ট্রাফিক পুলিশ তার অটোরিকশা আটক করে সদর পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। তার রিকশাটি জব্দ করে জব্দ তালিকার একটি কপি তার হাতে ধরিয়ে দিয়ে সেখানে লিখে দেয়া হয় ব্যাটারি ও চাকাবিহীন অটোরিকশা। তিনি বলেন, রাস্তা থেকে সচল রিকশা আটকের পর লেখা হলো ব্যাটারি এবং চাকাবিহীন রিকশা। তাহলে চাকা ও ব্যাটারিবিহীন রিকশা রাস্তায় চলে কীভাবে? বাধ্য হয়ে সাব্বির ব্যাটারি ও তিনটি চাকা খুলে নিয়ে যায়। ৯ দিন পর  ১৫ ফেব্রুয়ারি তাকে যখন রিকশাটি ফেরত দেয়া হয়, তখন রিকশার ইলেকট্রিক কন্ট্রোল বক্স ছাড়াও লাইট কন্ট্রোল তারগুলো রিকশার সঙ্গে ছিল না।

বিষয়টি ট্রাফিক ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহবুবুল ইসলাম খানকে বলতে গেলে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে ফাঁড়ি থেকে বের করে দেয়া হয় তাকে।

সাব্বির বলেন, চুরি যাওয়া মালামাল কিনে রিকশাটি চলাচল-উপযোগী করতে তার খরচ হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা। শাজাহানপুর উপজেলার দুবলাগাড়ী গ্রামের সিএনজি চালক সামাদ, বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামে সিএনজি চালক রহমত, মাঝিড়ার রিকশা চালক জব্বারসহ অসংখ্য রিকশা চালকের অভিযোগ তাদের সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আটক করে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর ব্যাটারি চুরি হয়ে যায়। এভাবে গত ছয় মাসে অন্তত ৪০ রিকশা চালকের ব্যাটারি চুরি হয়েছে সদর পুলিশ ফাঁড়িতে জব্দ করা রিকশা থেকে। চুরি যাওয়া ব্যাটারির মূল্য লক্ষাধিক টাকা।

রিকশা চালকরা বলেন, রিকশা আটকের পর আট থেকে ১০ দিন ফাঁড়িতে রাখা হয়। পরে রিকশা আনতে গেলে ব্যাটারি পাওয়া যায় না। যে কদিন রিকশা আটকে রাখা হয়, সেই কদিন ধারদেনা করে সংসার চালাতে হয়।

বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক সুজন মিঞা বলেন, রিকশা আটক করে ট্রাফিক পুলিশ। তারা রিকশা জব্দ করে তাদের হেফাজতে পুলিশ ফাঁড়ি চত্বরে রাখে। এখান থেকে ব্যাটারি চুরির ঘটনা ঘটে মাঝেমধ্যেই। এরই মধ্যে আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চুরি যাওয়া দুটি ব্যাটারি উদ্ধার করেছি। ব্যাটারি চুরির অভিযোগে আটক দুজনই রিকশা চালক।

সদর ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মাহবুবুল ইসলাম খান বলেন, ব্যাটারি বা রিকশার সরঞ্জাম চুরির সঙ্গে রিকশা চালকরাই জড়িত। আবার অনেক সময় চুরি না হলেও তারা বাড়িয়ে বলে। এ কারণে আমরা রিকশা আটকের পর সঙ্গে সঙ্গে ব্যাটারি খুলে নিয়ে যেতে বলি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০