পারভীন লুনা, বগুড়া: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা ঘিরে বগুড়ায় চলছে নানা আয়োজন। উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা ঘিরে ব্যস্ততা বেড়েছে প্রতিমার কারিগরদের। নতুন পোশাকের জন্য জেলা শহরের বিভিন্ন বিপণিবিতানেও বেড়েছে ভিড়।
পূজা ঘিরে বগুড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চলছে সাজসাজ রব। চলতি বছর জেলার ৬৮৬টি মণ্ডপে পূজার আয়োজন চলছে। আগামী ১১ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে এ উৎসব। ১৫ অক্টোবর দশমীতে বিসর্জনের মাধ্যমে দেবী বিদায় নেবেন মর্ত্য থেকে।
জানা গেছে, উৎসব সামনে রেখে বগুড়ায় প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। শিল্পীদের হাতের কারুকাজে প্রতিমার কাঠামো সেজে উঠেছে। কারিগররা আট থেকে ১০টি করে প্রতিমা নিয়ে রাতদিন কাজ করছেন। কয়েক দিনের মধ্যে মণ্ডপে মণ্ডপে চলে যাবে প্রতিমাগুলো। এজন্য মণ্ডপে চলছে নানা আয়োজন। কারিগররা কোথাও প্রতিমার কাঠামো তৈরি করে মাটি ভরাট করছেন, কোথাও মাটি ভরাট করে প্রতিমার প্রতিরূপ ফুটে তুলছেন। কোথাও আবার প্রতিমায় রঙের আঁচড় দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। আর কয়েক দিন পর সে আঁচড়ে সেজে উঠবে প্রতিমাগুলো। পূজা সামনে রেখে বগুড়া শহরের নিউ মার্কেট, হকার্স মার্কেট, শহরের জলেশ্বরীতলা, রানার প্লাজা, নবাববাড়ী সড়কের মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোয় পূজায় কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে। আর পূজা কাছে চলে আসায় অনেক পরিবার নতুন পোশাক কিনছেন।
বগুড়া জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম জানান, ২৭ সেপ্টেম্বর বগুড়া জেলা পর্যায়ের আলোচনা সভা হয়েছে। সেখানে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপুজা উৎসব পালনে বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬৮৬টি মণ্ডপ হচ্ছে। শেষ সময়ে এসে দুই থেকে একটি বাড়তে পারে। প্রতিটি মণ্ডপের বিপরীতে এবারও ৫০০ কেজি করে সরকারি চাল বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার দেব জানান, ‘জেলায় এবার বেশি সংখ্যাক মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর করোনার কারণে অনেক কিছুই থমকে গিয়েছিল। নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। করোনায় মানুষ বিপদগ্রস্ত। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় উৎসব পালন করা হবে।’
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাগর কুমার রায় জানান, প্রতিটি উপজেলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসবে যোগ দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নিরাপত্তা বিষয়ে নজর দিতে বলা হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পালনের জন্য প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ জানান, শারদীয় দুর্গা উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে উদ্যাপনের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা হাতে নেয়া হয়েছে।
এদিকে বগুড়া জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপুজা উৎসব পালন করতে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভা থেকে পূজায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে।