পারভীন লুনা, বগুড়া : বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলার মাঠ এখন ভরে গেছে সরষে ফুলে, ক্ষেতগুলোয় যেন হলুদের বাহার। মাঠে মাঠে সরষের ফুল ফুটেছে। কুয়াশার চাদর ভেদ করে সবুজ মাঠে এখন হলুদের সমারোহ। দেখে মনে হচ্ছে যেন চিত্রশিল্পির রংতুলির ছোঁয়ায় এঁকেছেন হলুদের মাঠ।
জেলা কৃষি অফিস বলছে, শীত যতটা বাড়বে সরষের ফলনও তত বাড়বে। আর চাষিরা স্বপ্ন নিয়ে বুক বেঁধে আছেন ভালো ফলন পাওয়ার আশায়। চলতি রবি মৌসুমে বগুড়া জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে সরষে চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে এবার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন চাষিরা।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ২৩ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে সরষে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৭ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন সরষে। কিন্তু আবহাওয়া ভালো থাকায় চাষ হয়েছে ২৬ হাজার ৯৬৫ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন ধরা হয়েছে এক দশমিক ৪৬ মেট্রিক টন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত বছর জেলায় সরষে চাষ হয়েছিল ২৩ হাজার ১১৫ হেক্টর। এ বছর চাষের জমি বেড়েছে, সে কারণে ফলনও বেড়ে যাবে। এর সঙ্গে শীত জেঁকে বসায় সরষের ভালো ফলনের কথা বলছেন চাষিরা। বগুড়ার কৃষি কর্মকর্তারা জানান, বগুড়ায় উচ্চফলনশীল জাত ও আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। অন্য ফসলের মতো সরষে চাষ বেশ লাভজনক। বাড়তি ফসল হিসেবে এ অঞ্চলে সরিষা চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সরষে চাষ করে অনেক কৃষকের ঘুরছে ভাগ্যের চাকা।
সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে এবং ভালো মূল্য পেলে এ অঞ্চলে সরষে চাষের পরিধি আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন চাষিরা। বগুড়ার বেলতলী গ্রামের সরষে চাষি মামুন বলেন, শীত আসার আগে থেকে স্থানীয় অনেক চাষি শীতকালীন সবজির পাশাপাশি সরষের চাষ করে থাকে। দেশে সরষের চাহিদা বৃদ্ধি এবং বাজারে দাম থাকায় চাষিরা উৎসাহিত হয়ে সরষে চাষ করে যাচ্ছেন। জমিতে লাগানো সরষের হলুদ ফুলের অপরূপ দৃশ্য মাঠে-প্রান্তরে। গ্রামবাংলা যেন নতুনরূপে সেজেছে।