আলমগীর হোসেন, বগুড়া: উত্তরাঞ্চলের বগুড়া, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলায় সরিষা চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর চার জেলায় ১৪ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। অর্থাৎ এবার এক লাখ ১৯ হাজার ৩৮২ হেক্টরে সরিষার চাষ হয়েছে। গত বছর হয়েছিল এক লাখ পাঁচ হাজার ১২০ হেক্টরে।
বগুড়া অঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর আশানুরূপ ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় এবার এ অঞ্চলে ব্যাপক হারে বেড়েছে সরিষার চাষ। উত্তরাঞ্চলের চার জেলায় এবার মোট এক লাখ ১৯ হাজার ৩৮২ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বগুড়া জেলায় ২৫ হাজার ৫৫৫ হেক্টর, জয়পুরহাটে ১০ হাজার ৬৯০ হেক্টর, পাবনায় ২৮ হাজার ৯৪২ হেক্টর এবং সিরাজগঞ্জে ৫৪ হাজার ১৯৫ হেক্টর জমিতে সরিয়া চাষ হয়েছে। গত বছর হয়েছিল এক লাখ পাঁচ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে।
বগুড়া সদর উপজেলার দশটিকা এলাকার চাষি মোজাম্মেল হোসেন ও আবদুল কুদ্দুস মণ্ডল জানান, এবার তাদের এলাকায় সরিষার ফসল বেশ ভালো হয়েছে। গত বছর প্রতি বিঘা জমিতে ছয় মণ সরিষা উৎপন্ন হয়েছে। সব খরচ বাদ দিয়ে তারা ভালোই অর্থ ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছেন।
জেলার গাবতলী উপজেলার চাষি জয়নাল আবেদীন ও মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর জানান, অন্য ফসলের চেয়ে সরিষা চাষ বেশ লাভজনক। বাড়তি ফসল হিসেবে এ অঞ্চলে সরিষা চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এতে অনেক কৃষক লাভবান হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে এবং সরিষার ভালো মূল্য পেলে এ অঞ্চলে সরিষা চাষের পরিধি আরও বৃদ্ধি পাবে।
জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার চাষি মোফাজ্জল হোসেন ও মামুনুর রশিদ জানান, সরিষা চাষে খরচ ও ঝামেলা কম এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে ঘরে তোলা যায়। এবার তারা চার বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছেন। ভরা মৌসুমে সরিয়ার বাজারদর কম হলেও সহজেই নিজ ঘরে ভালোভাবে সংরক্ষণ করা যায়। সে কারণে সরিয়া চাষাবাদে সহজেই লাভবান হওয়া যায়।
সোনাতলা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন সরদার জানান, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর বেশি জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এটি একটি লাভজনক ফসল। সেচ ও সার খরচ খুব কম। ফলে কৃষকের উৎপাদন খরচ কম এবং আয় বেশি হয় এই ফসলে।
বগুড়া অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক হজরত আলী জানান, সরিষার তেলের কদর সারা দেশেই অনেক বেশি। সে কারণে এ অঞ্চলের প্রতি বছরই বাড়ছে সরিষার চাষ। উত্তরের বগুড়া, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলার পথেঘাটে এখন সরিষা ফুলের ম ম গন্ধ আর বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ।