প্রতিনিধি, বগুড়া : অসুস্থ সন্তানের চিকিৎসা করাতে এসে আনসার সদস্যদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রুমা আকতার। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শজিমেক) নবজাতক ওয়ার্ডের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
স্ত্রীসহ মারধরের শিকার শহিদুল ইসলাম সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী থানায় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পদে কর্মরত। তিনি বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার বাসিন্দা।
জানা গেছে, শহিদুল দম্পতি দেড় মাস আগে তার এক আত্মীয়র কাছ থেকে ছেলেসন্তান দত্তক নিয়ে লালন-পালন করছিলেন। শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ায় গত শুক্রবার বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। আজ সকাল ১০টার দিকে চিকিৎসক ওয়ার্ডে প্রবেশ করে ভর্তিকৃত শিশুদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিচ্ছিলেন। এ সময় শিশুদের মা ছাড়া সবাইকে ওয়ার্ড থেকে বের করে দেয়া হয়। শহিদুল ইসলাম ওয়ার্ডের দরজায় দাঁড়িয়ে তার স্ত্রীর মোবাইল ফোন ও ব্যাগ জানালার সাথে রেখে পাহারা দিচ্ছিলেন। সেখানে ডিউটিরত আনসার সদস্য রুবেল দরজার সামনে থেকে শহিদুল ইসলামকে সরে যেতে বলেন। শহিদুল ইসলাম নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন, দরজার সামনে থেকে সরে গেলে ফোন এবং ব্যাগ হারিয়ে যেতে পারে। এ কথায় আনসার সদস্য রুবেল পুলিশ কর্মকর্তার সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায় সহকারী আনসার কমান্ডার মেজবাহ ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ কর্মকর্তা শহিদুলকে ধরে উপপরিচালকের কক্ষের সামনে নিয়ে মারধর শুরু করেন। স্বামীকে ধরে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখে স্ত্রী রুমা আকতার উদ্ধার করতে গেলে আনসার সদস্যরা তাকেও মারধর করেন বলে জানান শহিদুল ইসলাম। শজিমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা খবর পেয়ে পুলিশ কর্মকর্তা শহিদুল ও তার স্ত্রীকে আনসার সদস্যদের কবল থেকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। ঘটনার পরপরই শজিমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদের কক্ষে উভয়পক্ষকে নিয়ে সমঝোতা বৈঠক বসে। সেখানে মারধরের শিকার শহিদুল ইসলাম, তার স্ত্রী রুমা আকতার ও পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
শজিমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, হাসপাতালের নবজাতক ইউনিটে ভর্তিকৃত রোগীর লোকজনের সাথে আনসার সদস্যদের কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। সমঝোতা বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।