প্রতিনিধি,বগুড়া : বগুড়ায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মোঃ উজ্জল প্রামানিক নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক একেএম ফজলুল হক এই রায় দেন।তবে রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক ছিলেন।
উজ্জল বগুড়া সদরের কৈচর দক্ষিণ পাড়ার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।
নিহত নারীর নাম আলো বেগম। তিনি বগুড়া শহরের সুত্রাপুর এলাকার আকবর আলীর মেয়ে। ২০০৬ সালের ১ আগস্টে তাকে যৌতুকের দাবিতে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
এসব বিষয় নিশ্চিত করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নরেশ চন্দ্র মুখার্জি।
মামলার বরাতে তিনি জানান, ২০০৬ সালের জুনে আলো বেগমের সঙ্গে উজ্জলের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় উজ্জলের হাতে নগদ ৩০ হাজার টাকা যৌতুক হিসেবে দেন আলোর বাবা আকবর আলী।
কিন্তু বিয়ের এক মাস পর আসামি উজ্জল আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে উজ্জলের বাড়িতে দুই পক্ষের লোকজনেরা শালিস বৈঠকে বসেন। শালিসে উজ্জল ও তার স্বজনেরা জানায়, যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা না দিলে আলো বেগমকে তালাক দেয়া হবে। আলোর বাবাও আর কোনো টাকা না দেয়ার কথা জানিয়ে চলে আসেন।
আইনজীবী নরেশ চন্দ্র জানান, ওই পরিস্থিতি চলা অবস্থায় ১ আগস্ট উজ্জল তার শ্বশুর বাড়িতে খবর পাঠান যে, আলো বেগম অসুস্থ। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন কৈচড় গেলে ঘরের তীরের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় আলো বেগমের মরদেহ দেখতে পান।
পরবর্তীতে ১৮ আগস্ট বগুড়া সদর থানায় এ ঘটনায় আলো বেগমের দুলাভাই জাহাঙ্গীর আলম একটি হত্যা মামলা করেন। তবে মামলার পর থেকেই নিহতের স্বামী উজ্জল প্রামানিক পলাতক রয়েছেন।
বিশেষ পিপি নরেশ চন্দ্র মুখার্জি বলেন, ওই সময় আলো বেগমের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ময়নাতদন্তে হত্যার আলামত পাওয়া যায়। পরে এসব আলামত যাচাইবাছাই ও বিভিন্ন সাক্ষ্যে জানা যায় আলো বেগমকে মারধর করে হত্যার পর তীরের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছিল তার স্বামী উজ্জল।
এই হত্যা মামলায় দীর্ঘ শুনানির শেষে উজ্জলকে ১৬ বছর পর মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেন বিচারক।আইনজীবী আরও বলেন, এ ছাড়া মামলায় আরও চার আসামি হিরা প্রামানিক, আলেয়া বেওয়া, লাভলি বেগম ও নাজমুল হোসেনকে বেকসুর খালাস দেন বিচারক।