বগুড়া বাফার গোডাউন জমাট বাঁধা সার গুঁড়ো করে বাজারজাত

 

বগুড়া প্রতিনিধি: আমদানি করা ইউরিয়া জমাট বাঁধায় বগুড়ার বাফার গোডাউন কর্তৃপক্ষ গুঁড়ো করে দেশীয় কোম্পানির সারের সঙ্গে মিশিয়ে বাজারজাত করছে। এ ঘটনায় সার ডিলাররা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। অন্যদিকে বগুড়া বাফার গোডাউনের ধারণ ক্ষমতার বেশি সার আসায় শত শত বস্তা ইউরিয়া খোলা আকাশের নিচে রয়েছে।

সূত্র জানায়, বাফার গোডাউনে থাকা ইউরিয়া সারের ৮০ ভাগই চায়না ও আরব আমিরাত থেকে আমদানি করা। এর মধ্যে অর্ধেকই আবার চায়না সার। সংশ্লিস্টরা জানান, আসন্ন বোরো মৌসুম ঘিরে বাফার গোডাউনে সারের মজুদ বাড়ানো হয়েছে। বাফার গোডাউনের ধারণ ক্ষমতা ৯ হাজার মেট্রিক টন হলেও এখানে রয়েছে প্রায় সাড়ে ২১ হাজার মেট্রিক টন সার। এসব সারের মধ্যে প্রায় ৬ হাজার মেট্রিক টন গত কয়েক মাস ধরে রয়েছে খোলা আকাশের নিচে। এর মধ্যে বর্ষা মৌসুমও পার হয়েছে একই অবস্থায়। আর ২১ হাজার মেট্রিক টন সারের মধ্যে আমদানি করা সারের পরিমাণই বেশি। এসব সার জমাট বেঁধেছে। সংশ্লিস্টরা জানান, আসন্ন বোরো মৌসুমে জেলায় সারের চাহিদা রয়েছে ৫৪ হাজার মেট্রিক টন। জেলায় সারের ডিলার রয়েছে ১৬৩ জন। সার ডিলাররা জানান, ফেঞ্চুগঞ্জের শাহজালাল ফার্টিলাইজার ও চট্টগ্রামের কাফকো কারখানায় তৈরি সার ছাড়াও আমদানি করা সার সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে দেশীয় সার কারখানায় উৎপাদিত সারের মান ভালো হওয়ায় কৃষক পর্যায়ে এর চাহিদা বেশি। এ কারণে ডিলাররা আমদানি করা সারের চেয়ে দেশীয় সার উত্তোলনে বেশি আগ্রহী। সার জমাট বেঁধে যাওয়ায় বিক্রি না হওয়ার শঙ্কায় ডিলাররা তা বাফার গোডাউন থেকে উত্তোলন করতে চাচ্ছেন না। তাই আমদানি করা জমাট বাঁধা সার এখন বস্তা থেকে বের করে গুড়া করে রিপ্যাকিং কাজ চলছে। এ প্রক্রিয়ায় আবার শাহজালাল কারখানায় উৎপাদিত সারের সঙ্গে আমদানি করা সার মিশিয়ে দেশীয় শাহজালাল ফার্টিলাইজার লেখা বস্তায় ভরা হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বগুড়ার উপ-পরিচালক প্রতুল চন্দ্র সরকার  জানান, জমাট ও নষ্ট বস্তার কারণে এসব সার নিতে কৃষকদের অনীহার বিষয়টি তারা জানতে পেরে বিসিআইসি কর্তৃপক্ষের নজরে দিয়েছেন। তিনি জানান, এসব সারের গুণগত মান নিয়ে কোনো সংশয় নেই। এ সমস্যা দ্রুতই সমাধান হবে বলে তাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সোমবার বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থেকে আসা সার ডিলার মেসার্স অনিক ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী বিজন কুমার জানান, জমাট বাঁধা সার নিয়ে তারা লোকসানে পড়ছেন। এসব সার কৃষকরা নিতেই চাচ্ছেন না। চায়না থেকে আসা সারই বেশি সমস্যা করছে।

ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশন বগুড়া শাখার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন জানান, গত মৌসুম থেকে আমদানি করা সার পড়ে রয়েছে। জমাট বেঁধে যাওয়া ছাড়াও সারের বস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। এসব জমাট বাঁধা সার কোনো ডিলারই নিতে চান না। তারা এ অবস্থায় নাজুক সময় পার করছেন। কারণ কৃষকরা জমাট বাঁধা সার নিতে না চাইলে তাদের উপায় থাকে না। অতিরিক্ত সার মজুত থাকায় সারের বাড়তি দামও নেই। তাই তাদের চাওয়া দেশীয় ভালো সার।

এ ব্যাপারে বগুড়া বাফার অফিসার ইনচার্জ জসিম উদ্দিন রিপ্যাকিং করার কথা স্বীকার করে জানান, ডিলাররা জমাট বাঁধা সার নিতে না চাওয়ায় তা পরিবহন ঠিকাদারদের শ্রমিকদের মাধ্যমে রিপ্যাকিং করা হচ্ছে। এর গুণগত মান নিয়ে কোনো সংশয় নেই। শুধু নভেম্বর মাস থেকে আসা আমদানি করা সারের মধ্যে প্রায় ৭০০ বস্তা সার ত্রুটিযুক্ত বস্তায় জমাট বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গেছে।

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০