নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বঙ্গবন্ধু এক ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে জাতি তাকে হƒদয়ে ধারণ করে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিব, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন ও ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সেদিন বিশ্বাস হচ্ছিল না যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হবে। আমি থমকে গিয়েছিলাম। আমরা হতবাক হয়ে দেখলাম, শুধু বঙ্গবন্ধু নয়, সেই বাড়িতে বঙ্গমাতাসহ তার পরিবারের সবাই সেদিন শাহাদাতবরণ করেছেন। সেখানে পুলিশের একজন এএসআইও শাহাদাতবরণ করেছেন। যিনি বীরত্বের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে রক্ষার জন্য এগিয়ে গিয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে আমাদের কপালে যে কালো দাগ, এটা আমরা অনেকদিন ধরে বয়ে বেড়িয়েছি। পৃথিবীর অনেক দেশ আমি ঘুরে বেড়িয়েছি। সেখানে সব দেশ থেকে আমাকে জিজ্ঞাসা করা হতো, তোমরা সেই জাতি, যেই জাতি তোমাদের জাতির পিতাকে হত্যা করেছো।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পরে আমাদের খাদ্যভান্ডারে খাদ্য ছিল না। ব্যাংকে সঞ্চয় ছিল শূন্য। শার্ট পরব, প্যান্ট বানাব সেই কাপড়টাও ছিল না। সারা বাংলাদেশ একটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সারা পৃথিবী থেকে তিনি সাহায্য পেয়েছিলেন। বিশ্বের সব নেতা তাকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন, সম্মান করতেন, যেকোনো ভাবেই তাকে সহযোগিতা করার জন্য উৎসাহ প্রদান করতেন।’
পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যখন দুঃসময় আসে তখন পুলিশ ঘুরে দাঁড়ায়। সেই ২৫ মার্চে যেমন তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল, বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করার জন্যও যেমন ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তেমনি কভিডের সময়ও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। পুলিশ বাহিনী এখন সব সময় সম্মুখ সেনা হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। সেই জন্য আমরা বোধহয় একটা স্বস্তির জায়গায় এসেছি।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সবার জন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও বাসস্থানের স্বপ্ন দেখতেন। আজকে তাঁরই কন্যা যার ধমনীতে বঙ্গবন্ধুর রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে, আজকে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হƒদয়ে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করে চলেছেন। সেজন্যই আমাদের দেশ আজ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদাতবরণকারী বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে নিহত পুলিশ সদস্য এএসআই সিদ্দিকুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সম্মাননা স্মারক তার পুত্র মাহফুজুর রহমানের হাতে তুলে দেয়া হয়।