মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়ল বিলে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এক যুগ পর গত ২৩ আগস্ট বিকালে বিলসংলগ্ন গাদিঘাট থেকে বিলের দুই কিলোমিটারজুড়ে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। গাদিঘাট গ্রামের ছাত্রসমাজ এ আয়োজন করে। এর নাম দেওয়া হয় ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি নৌকাবাইচ-২০১৯’। বাইচে অংশ নেয় নানা বর্ণের ও নানা সাজের এক ডজনের বেশি নৌকা।
নৌকাবাইচ দেখতে দূরদূরান্ত থেকে হাজারো নারী-পুরুষ ভিড় করে বিলে। বিকালে বৈরী আবহাওয়ায় বৃষ্টি শুরু হয়। তবে বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিলজুড়ে ছিল আনন্দের আমেজ। ট্রলার ও নৌকাযোগে বাইচের পথের দু’পাশে অবস্থান নেয় নারী-পুরুষ। তারা হাততালি ও বিভিন্ন সেøাগান দিয়ে বাইচে অংশ নেওয়া মাঝি-মাল্লাদের উৎসাহ দেয়। নারী-পুরুষের আনন্দ আমেজে বিল এলাকা মুখর হয়ে ওঠে।
বাইচে অংশ নেওয়া নৌকাগুলোর মধ্যে ছিল: লস্করপুর একতা, টাইগার কোষা, রাঢ়ীখাল এক্সপ্রেস, মধু মাঝি সবুজ মাঝি, লায়ন, অধিরপাড়া এক্সপ্রেস, শিকদার বাড়ি, মত্তগ্রাম এক্সপ্রেস-২, বুলেট, নিউ বুলেট, সোনার বাংলাসহ অন্যান্য নৌকা। কোনো কোনো নৌকায় মাঝি ছিলেন ৩০ জন, ৫৫ জন; কোনোটায় ছিলেন ৬২ জন। প্রতি নৌকায় ছিলেন একজন করে গায়েন (পরিচালক)। নানা বাদ্যযন্ত্রের সমান তালে বৈঠা চালিয়ে মাঝিরা নৌকা চালিয়ে প্রতিযোগিতার পথ পাড়ি দেন।
আবদুল হালিম হালদার নামে স্থানীয় এক অধিবাসী বলেন, অতীতে প্রতিবছর এ আড়িয়ল বিলে নৌকাবাইচ হতো। দল বেঁধে ট্রলার-নৌকায় বাইচ দেখতে আসতাম। দীর্ঘ এক যুগ পর আবারও বিলে নৌকাবাইচ হলো। এ আয়োজনের কারণে আমরা সবাই খুশি।
প্রথমবারের মতো নৌকাবাইচ দেখতে আসা ছাত্র সাইফুল ইসলাম বলেন, নৌকাবাইচের কথা শুনেছি। এই প্রথম দেখলাম। আমরা খুব আনন্দিত। প্রতিবছর এমন আয়োজন হলে আমাদের গ্রামবাংলার এমন ঐতিহ্য টিকে থাকবে।
নৌকাবাইচে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রীনগর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমান জিঠু। এছাড়া শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউনুস আলী উপস্থিত ছিলেন। নৌকাবাইচ শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
শেখ মোহাম্মদ রতন, মুন্সীগঞ্জ