বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে সব টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক: বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর মাধ্যমে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত চারটিসহ ৩০টি বেসরকারি টেলিভিশনের সম্প্রচার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল সকালে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এই সম্প্রচার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াগুলোর সম্প্রচারের ক্ষেত্রে অনেক বাধাই দূর হয়ে যাবে বলে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আর পরনির্ভরশীল থাকতে হবে না, অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না। নিজের পায়ে আত্মমর্যাদার সঙ্গে দাঁড়ানোর সুযোগ হয়েছে।’
‘বিদেশি স্যাটেলাইট ভাড়া করে যে টাকা খরচ হতো, সেটা বেঁচে গেছে। অনেক টাকা বেঁচে যাচ্ছে। টাকা পাঠানো ঝামেলাও ছিল, কবে আবার কে কোন মামলায় পড়ে যান তার দুশ্চিন্তা ছিল। এখন সে দুশ্চিন্তাও দূর হয়ে গেল,’ বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন এই স্যাটেলাইটের কারণে টেলিযোগাযোগ শিল্পে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, টেলিযোগাযোগ সেবার মান বৃদ্ধি পাবে। এর মাধ্যমে টেলিমেডিসিনের সুযোগ বাড়বে। একেবারে দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষ, চর বা হাওর অঞ্চলের মানুষ চিকিৎসার সুযোগ পাবে, পরামর্শ নিতে পারবে। এতে বিরাট সহযোগিতা হবে।’
তিনি বলেন, ‘স্যাটেলাইটের মাধ্যমে একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ই-এডুকেশন সিস্টেম চালু করতে পারব। ছেলেমেয়েরা অনেক উন্নত শিক্ষা সেখানে বসে নিতে পারবে। এছাড়া ৪০টি দ্বীপে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি নেটওয়ার্ক স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এটি খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে।’
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস এবং অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের চেয়ারম্যান অঞ্জন চৌধুরী।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর আজ পর্যন্ত কোনো ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতি, সামান্যতম সমস্যাও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। শঙ্কা ছিল স্যাটেলাইট বানিয়ে দিচ্ছে ফ্রান্স, উৎক্ষেপণ করে দিয়েছে আমেরিকা, কিন্তু এটি চালাবে কে? বিস্ময়কর হচ্ছে বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা এখন এই স্যাটেলাইট দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করছে।’
টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটকে যেভাবে সফলতার সঙ্গে আজকের পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে, সেভাবে দুয়ের পরিকল্পনা চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। পৃথিবীতে কেবল ফাইভজি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, স্ট্যান্ডার্ড কী হবে তা নির্ধারণ করা হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ ফাইভজির জন্য রোডম্যাপ তৈরি করছে।’
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ স্যাটেলাইট ক্লাবের ৫৭তম গর্বিত সদস্য। পৃথিবীর অনেক দেশ এই স্যাটেলাইট ক্লাবের সদস্য নয়।’ আজ থেকে সব টেলিভিশন চ্যানেল বিদেশি কোনো স্যাটেলাইটের সেবা না নিয়ে শুধু বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যবহার করে সম্প্রচার করবে বলে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।