বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে ৩০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে ওরিক্স

নিজস্ব প্রতিবেদক: গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে বায়ো-টেকনোলজি নিয়ে কাজ করবে ওরিক্স বায়ো-টেক লিমিটেড। এজন্য প্রতিষ্ঠানটি বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে এক অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

এ লক্ষ্যে হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, সামিট গ্রুপ এবং ওরিক্স বায়ো-টেক লিমিটেডের মধ্যে এক ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সই হয়। এর আওতায় ওরিক্স বায়ো-টেক লিমিটেডকে ব্লক-২ এ ২৫ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং প্রায় দুই হাজার জনের উচ্চ বেতনের কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ দেশ বায়ো-প্রযুক্তিতে অনেক দূর এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদ সংশ্লিষ্টদের। 

মূলত হিউম্যান প্লাজমা থেকে বায়ো-টেক পণ্য উৎপাদিত হয়। এইচআইভি এইডস এবং ক্যানসার রোগের চিকিৎসায় এসব বায়ো-টেক ওষুধ এখন ব্যবহƒত হচ্ছে।

ওরিক্স বায়ো-টেক লিমিটেড বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে বছরে ১২০০ টন প্লাজমা বিশ্লেষণে সক্ষম প্ল্যান্ট নির্মাণ করতে আগ্রহী। এর সঙ্গে ২০টি প্লাজমা সংগ্রহ স্টেশন সংযুক্ত থাকবে। প্রতিষ্ঠানটি এক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ অন্যান্য উন্নত বিশ্বের মান বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বাজারে বায়ো-টেক পণ্য সহজলভ্য হবে।

অনুষ্ঠানে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, কালিয়াকৈরে অবস্থিত ‘বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’ দেশের প্রথম ও বৃহত্তম হাই-টেক পার্ক। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ সরেজমিনে এ পার্কটি পরিদর্শন করে পার্কের উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। ৩৫৫ একর জমিতে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে এখন ৩৭টি কোম্পানিকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সেখানে পাঁচটি কোম্পানি উৎপাদন শুরু করেছে। কোম্পানিগুলো এ পার্কে মোবাইল ফোন এসেম্বলিং ও উৎপাদন, অপটিকাল কেবল, হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, ডেটা-সেন্টার প্রভৃতি উচ্চ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করবে। ইতোমধ্যে ৩২৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে এবং প্রায় ১৩ হাজার জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে হাই-টেক পার্কগুলোতে ২৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে বলে আমরা আশাবাদী।

তিনি হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগ সম্ভাবনা ও সুযোগ সম্পর্কে একটি উপস্থাপনা পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে তুলে ধরেন। 

আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম বলেন, আইসিটি বিভাগ করোনা মোকাবিলায় যে ভূমিকা রেখেছে তা দেশের সর্বস্তরে প্রশংসিত হয়েছে। করোনার সংক্রমণরোধে প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে আইসিটি বিভাগ। লাইভ করোনা টেস্ট, কভিড-১৯ ট্র্যাকার, টেলি-মেডিসিন ও টেলিহেলথ, সহযোদ্ধা-প্লাজমা প্ল্যাটফর্ম প্রভৃতি বহু উদ্যোগের সুফল পেয়েছে দেশবাসী। এর থেকেই একটি দেশের আইসিটি খাতের অগ্রগতির চিত্র সুস্পষ্ট।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান বলেন, সামিট টেকনোপলিসে দেশের সর্বপ্রথম বায়ো-টেক শিল্প স্থাপনের জন্য ওরিক্সকে স্বাগত জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত। প্রাক-কভিড পরিস্থিতিতে যখন এ বিনিয়োগের ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করা হয় তখন প্লাজমা ফ্রাকশানেশন প্লান্ট স্থাপন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। করোনাভাইরাসের একটি সম্ভাব্য চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে এখন যার তাৎপর্য বহুমাত্রায় উšে§াচিত হয়েছে।

অনষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও মানবসম্পদ উন্নয়নে হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ একেবারে ন্যূনতম জনবল নিয়েও নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। 

অনুষ্ঠানে অনলাইনে সংযুক্ত হন ওরিক্স বায়ো-টেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডেভিড বো। এছাড়া ওরিক্স বায়ো-টেক লিমিটেডের চেয়ারম্যান কাজী শাকিল এবং সামিট টেকনোপলিশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রেজা খানসহ সংশ্লিষ্টরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০