বঙ্গবাজারের অস্থায়ী মার্কেটে বেচাকেনা শুরু আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বঙ্গবাজারে আগুনে পুড়ে যাওয়া মার্কেটের জায়গায় অস্থায়ীভাবে ব্যবসায়ীদের বসানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইট বিছিয়ে মেরামত করে নতুনভাবে গড়ে ওঠা অস্থায়ী এই মার্কেট এখন দৃশ্যমান। দোকানিরা আজ বুধবার এখানে বসে বেচাকেনা শুরু করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ী নেতারা।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে আগুনে পোড়া মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ধ্বংসাবশেষ সরানোর কাজ শেষের দিকে। ইতোমধ্যে অর্ধেকের মতো জায়গা নতুন ইট ও বালি দিয়ে সংস্কার করে চৌকি বসানোর মতো ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা অপেক্ষা করছেন, কখন তারা নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।

এদিকে বঙ্গবাজারে ফুটপাতে বসানো দোকানের পাশাপাশি আশপাশের মার্কেটের দোকানগুলোও খুলেছে। আংশিকভাবে পোড়া এনেক্সকো টাওয়ার, বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেট ও বঙ্গ হোমিও মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের পাশাপাশি বঙ্গবাজারে ক্রেতা ফেরানোর জন্যও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজ করতে হবে। তা না হলে এখানকার ব্যবসায়ীরা ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন না।

বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটের হ্যান্ডকাফ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিক্রেতা আবদুর রবের কাছে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, সাধারণত ২০ রোজার পর এখানে জেলা পর্যায়ের কোনো পাইকারি ক্রেতা আর আসেন না। সেই হিসেবে এবার বড় ব্যবসা করার সুযোগ আর নেই। তবে রাস্তা খুলে দিলে এবং ব্যবসায়ীরা দোকান নিয়ে বসতে পারলে ঢাকার আশপাশের কিছু ক্রেতা পাওয়া যেতে পারে। আর এবার খুচরা বেচাকেনার ওপরে নির্ভর করছে, ব্যবসা কতটুকু ফিরবে।

এদিকে বেলা ১টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতি জানায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাছে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে ২ হাজার ৯৬১ জন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর তালিকা দেয়া হয়েছে। এসব ব্যবসায়ীকে বুধবার দুপুর ১২টা থেকে মার্কেটের জায়গায় অস্থায়ীভাবে বসানো হবে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র এসে ব্যবসায়ীদের বসানোর ব্যবস্থা করবেন।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তহবিলে গত সোমবার পর্যন্ত ২ কোটি ১২ লাখ টাকা জমা পড়েছেÑউল্লেখ করে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘এই তহবিলের পুরো টাকা সরকারের কাছে যাবে। আশা করছি, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে একটা বড় অনুদান আসবে। সব মিলিয়ে এই টাকা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে সরকারি উদ্যোগেই বণ্টন করা হবে।’

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বলা হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের চৌকি বিছিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ করে দিতে বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডস্থল প্রস্তুত করা হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদের তত্ত্বাবধানে এবং করপোরেশন গঠিত তদন্ত কমিটির সার্বিক সহযোগিতায় অঞ্চল-১-এর আঞ্চলিক নির্বাহী প্রকৌশলী মিঠুন চন্দ্র শীলের নেতৃত্বে দোকানের জায়গা প্রস্তুত করা হচ্ছে।

এই কাজের অংশ হিসেবে বঙ্গবাজারের ১ দশমিক ৭৯ একর জায়গাজুড়ে বালি ও ইট বিছানো হবে। ইতোমধ্যে সেখানে ৪০ গাড়ি বালি ফেলা এবং প্রায় ৯০ হাজার ইট বিছানো হয়েছে। পুরো এলাকায় প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার ইট বিছানো এবং প্রায় ১৫০ গাড়ি বালি ফেলা হবে জানা গেছে। আজকের মধ্যে পুরো এলাকায় বালি ফেলা ও ইট বিছানোর লক্ষ্যে করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কাজ করছেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, পুড়ে যাওয়া জায়গা থেকে বর্জ্য অপসারণের কার্যক্রম চলছে। করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. হায়দর আলীর নেতৃত্বে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডস্থল থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬০ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০