নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্লোব বায়োটেক তাদের উদ্ভাবিত করোনা ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রোটোকল জমা দিয়েছে। বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলে (বিএমআরসি) গতকাল বেলা সাড়ে ১২টায় প্রটোকল জমা দেয়া হয়। এর মাধ্যমে ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ইথিক্যাল অ্যাপ্রুভাল বা ইথিক্যাল ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করা হলো।
বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলে ২০টি ফাইলে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রোটোকল জমা দেয়া হয়। আবেদনে একসঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় ট্রায়ালের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।
গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদসহ গ্লোব বায়োটেকের কর্মকর্তারা বেলা সাড়ে ১১টায় বিএমআরসিতে যান। পুরো প্রোটোকলসহ প্রায় ১০ হাজার পৃষ্ঠার আবেদন জমা দেন তারা। আর বিএমআরসির পক্ষে এক সহকারী পরিচালক তাদের আবেদন গ্রহণ করেন।
তাদের পক্ষে সিআরও লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের কাজটি করবে। আর অনুমোদন হলে একটি সরকারি হাসপাতালে এই ট্রায়াল দেয়া হবে বলে জানান আসিফ মাহমুদ।
গত ২৮ ডিসেম্বর গ্লোব বায়োটেককে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের অনুমতি দেয়া হয়। শুরুর দিকে গ্লোবের এই টিকার নাম ব্যানকোভিড থাকলেও সেটি পরিবর্তন করে বঙ্গভ্যাক্স নাম রাখা হয়।
বিশ্বে যেসব টিকা তৈরির কাজ করা হচ্ছে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকায় ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পর্যায়ে রয়েছে ৪২টি টিকা আর প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অর্থাৎ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগের অবস্থায় রয়েছে ১৫৬টি টিকা। এই তালিকায় বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেকের নাম রয়েছে।
ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য আইসিডিডিআর,বি’র সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) থাকলেও গত ১ ডিসেম্বর আইসিডিডিআর,বি’র অনাগ্রহের অভিযোগ তুলে তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে গ্লোব একথা জানান প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ।
মানবদেহে বঙ্গভ্যাক্সের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের এই গবেষণায় কাজ করবেন ৫৭ জনের একটি দল, যার প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব জানান, অনুমোদন পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যেই ট্রায়াল শুরু করতে পারবেন তারা। শতাধিক স্বেচ্ছাসেবকের ওপর এটা প্রয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
গেøাব বায়োটেক তাদের এ ভ্যাকসিনের নাম দিয়েছে বঙ্গভ্যাক্স। বাংলাদেশে কোনো ভ্যাকসিনের ফেজ-১-এর ট্রায়াল হবে, এটা আমাদের জন্য মাইলফলক বলে মন্তব্য করেছেন ড. আসিফ মাহমুদ।
এর আগে ২ জুলাই প্রতিষ্ঠানটি দেশে প্রথম ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়। সেদিন তারা জানায়, গত ৮ মার্চ তারা এই টিকা আবিষ্কারের কাজ শুরু করেন। ৫ অক্টোবর গ্লোব জানায়, তারা সফলভাবে প্রাণিদেহে তাদের ট্রায়াল সম্পন্ন করেছেন। এখন হিউম্যান ট্রায়ালে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।
বিএমআরসি’র অনুমোদন পেলেই তারা হিউম্যান ট্রায়াল শুরু করবেন বলেও জানান আসিফ মাহমুদ।