নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচনী উত্তেজনার মধ্যেও সদ্য শেষ হওয়া বছরের শুরুতে বাজার ইতিবাচক গতিতে শুরু হয়েছিল। বছরের শুরুর ১৮ কার্যদিবসে সূচক উঠে গিয়েছিল পাঁচ হাজার ৯৫০ পয়েন্টে। কিন্তু বছর শেষে সূচক নেমে এসেছে চার হাজার ৪৫৩ পয়েন্টে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বছরজুড়ে লেনদেনে নেতৃত্ব দিয়েছে যেসব কোম্পানি তাদের লেনদেনের গড়ের ভিত্তিতে শীর্ষে উঠে আসে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। ইবিএল সিকিউরিটিজ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ইউনাইটেড পাওয়ারের বছরজুড়ে লেনদেন হয় তিন হাজার ৯৫৩ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের তিন দশমিক ৩৩ শতাংশ। শেয়ারটির সর্বশেষ দর দাঁড়িয়েছে ২৫৩ টাকা ৯০ পয়সা। কোম্পানিটির সর্বশেষ পিই রেশিও ১৮ দশমিক দুই।
২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানিটি ১৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ও ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে কোম্পনিটি। ওই সময় কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৬ টাকা আট পয়সা এবং ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৬২ টাকা ৮০ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ১৬ টাকা ১৪ পয়সা।
এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ৯০ শতাংশ নগদ ও ২০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে।
‘এ’ ক্যাটেগরির ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ২০১৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটির ৮০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৫২৬ কোটি ৯৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ দুই হাজার ২৭৭ কোটি ১৭ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট ৫২ কোটি ৬৯ লাখ ৯৫ হাজার ৭০১টি শেয়ার রয়েছে। মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকের কাছে ৯০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ছয় দশমিক ৯৪ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ এবং তিন দশমিক শূন্য এক শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।
এরপরে চামড়া শিল্প খাতের ফরচুন শুজের দুই হাজার ৫৩৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের দুই দশমিক ১৩ শতাংশ। কোম্পানিটির সর্বশেষ শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ২২ টাকা ৯০ পয়সা। এর সর্বশেষ পিই রেশিও ছয়। এরপরে সিরামিক খাতের মুন্নু সিরামিকের দুই হাজার ৫০৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের দুই দশমিক ১১ শতাংশ। শেয়ারটির সবশেষ দর দাঁড়িয়েছে ১১৯ টাকা। কোম্পানিটির সর্বশেষ পিই রেশিও ২৯ দশমিক ৯। বস্ত্র খাতের রিং শাইন টেক্সটাইলের ১২৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের দুই দশমিক শূন্য আট শতাংশ। কোম্পানিটি চলতি ডিসেম্বর মাসে লেনদেন শুরু করে। শেয়ারটির সর্বশেষ দর ১০ টাকা ৩০ পয়সা। এর পিই রেশিও দাঁড়িয়েছে পাঁচ দশমিক ছয়। ওষুধ ও রসায়ন খাতের স্কয়ার ফার্মার দুই হাজার ৩০৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের এক দশমিক ৯৪ শতাংশ। শেয়ারটির সর্বশেষ দর ১৮৮ টাকা ৯০ পয়সা। কোম্পানিটির বর্তমান পিই রেশিও ১১ দশমিক দুই। এরপরের অবস্থানে উঠে আসে টেলিযোগাযোগ খাতের বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি। এর দুই হাজার ৪৪ কোটি টাকা ৫২ লাখ টাকা লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের এক দশমিক ৭২ শতাংশ। শেয়ারটির সর্বশেষ দর ৯৪ টাকা ৮০ পয়সা। কোম্পানিটির সবশেষ পিই রেশিও ২২ দশমিক পাঁচ। ব্র্যাক ব্যাংকের লেনদেন হয় দুই হাজার ৩৩ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার, যা মোট লেনদেনের এক দশমিক ৭১ শতাংশ। শেয়ারটির সর্বশেষ দর দাঁড়িয়েছে ৫৬ টাকা ৮০ পয়সা। সর্বশেষ পিই রেশিও ১৫ দশমিক পাঁচ। অষ্টম অবস্থানে থাকা গ্রামীণফোনের এক হাজার ৮৯৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকা লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের এক দশমিক ৬০ শতাংশ। শেয়ারটির সর্বশেষ দর দাঁড়িয়েছে ২৮৫ টাকা ৮০ পয়সা। সর্বশেষ পিই রেশিও ১১ দশমিক চার। প্রকৌশল খাতের ন্যাশনাল টিউবসের এক হাজার ৭০২ কোটি ৭১ লাখ টাকা লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের এক দশমিক ৪৩ শতাংশ। শেয়ারটির সর্বশেষ দর ১২৩ টাকা ৪০ পয়সা। সর্বশেষ পিই রেশিও ১৭৭ দশমিক এক। দশম অবস্থানে উঠে আসে ওষুধ ও রসায়ন খাতের জেএমআই সিরিঞ্জ। কোম্পানিটির এক হাজার ৬৩৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের এক দশমিক ৩৮ শতাংশ। শেয়ারটির সর্বশেষ দর ৩১২ টাকা ১০ পয়সা। সর্বশেষ পিই রেশিও ৬৩ দশমিক ছয়।