Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 12:54 am

বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বেড়েছে মূল্যস্ফীতি  

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। আগাম বন্যায় চালের দাম বৃদ্ধি এবং বাজেটকে এ প্রবণতার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) গতকাল মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ এ তথ্য প্রকাশ করে। একনেক সভা-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

চলতি বছরের দ্বিতীয় এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) এসে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৭২ শতাংশ, যা আগের প্রান্তিকে ছিল ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। বিবিএসের হিসাবে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সার্বিক গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। তার আগের অর্থবছর তা ছিল ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ ছিল। যদিও অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।

৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতির অর্থ হলো, ২০১৬ সালের জুনের শেষে যে পণ্য বা সেবার জন্য ১০০ টাকা খরচ করতে হতো, ২০১৭ সালের জুনের শেষে এসে তার জন্য ১০৫ টাকা ৪৪ পয়সা খরচ করতে হচ্ছে। গত অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক ২০১৬ সালেল অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৩২ শতাংশ এবং জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকে ছিল ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভার পর এক সংবাদ সম্মেলনে মূল্যস্ফীতির তথ্য তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘দেশে আগাম বন্যার ফলে চালের দাম বেড়ে যাওয়া মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির প্রধান কারণ। এছাড়া গত মাসে বাজেট ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কিছু পণ্যের দাম বেড়ে যায়। বিষয়টি মূল্যস্ফীতিতে কিছুটা প্রভাব ফেলেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত অর্থবছরের ১২ মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে খাদ্য উপখাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, যা আগের অর্থবছর ছিল ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ ছিল। আর খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে এক বছরে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ, যা তার আগের অর্থবছর ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ ছিল। সব মিলিয়ে গত অর্থবছরের ১২ মাসের সার্বিক গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

গত বছর জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৮ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল। অর্থবছর শেষে দেখা যাচ্ছে, সেই চেষ্টা সফল হয়েছে। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশের নিচে রাখার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।

বিবিএস’র তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল-জুন সময়ে খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে চাল, গরুর মাংস, শাকসবজি, কাঁচা মরিচ, সয়াবিন তেল, চা ও দুধের দাম বেড়েছে। আর খাবারের বাইরে পরিধেয় বস্ত্র, জ্বালানি, বাড়িভাড়া, আসবাবপত্র ও গৃহস্থালি, চিকিৎসাসেবা, পরিবহন ও শিক্ষা উপকরণে ব্যয় বেড়েছে।

পরিসংখ্যান ব্যুরো আগে প্রতি মাসে মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করলেও গত মে মাসে এসে প্রান্তিক বা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে এ তথ্য প্রকাশ শুরু হয়, যা নিয়ে সমালোচনা রয়েছে।