Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 12:23 pm

বছরের প্রথম দিনে সূচকের মিশ্র প্রবণতায় লেনদেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বছরের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের মিশ্র প্রবণতায় লেনদেন হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল ডিএসইএক্স ও ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক সামান্য ইতিবাচক হলেও কমেছে ডিএস৩০ সূচকের দর। প্রায় ৬৩ শতাংশ কোম্পানির দর বৃদ্ধি পেলেও সূচক আশানুরূপ বাড়েনি। আর মৌলভিত্তির কোম্পানির দরপতনই ডিএস৩০ সূচক পতনের অন্যতম কারণ। লেনদেন কমে ফের ২০০ কোটি টাকার ঘরে নেমেছে। লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান হলেও ২০ মিনিটের মধ্যে বিক্রির চাপ শুরু হলে সূচক ধীরে ধীরে নিম্নমুখী হয়। বেলা ১টা পর্যন্ত পতনের পর সামান্য ওঠার চেষ্টা করে। তবে গতকাল সূচকের গতিতে অস্থিরতা লক্ষ করা গেছে। কেনা ও বেচার চাপে সূচক বারবার ওঠানামা করতে থাকে। চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই চিত্র দেখা গেছে।        

বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স দশমিক ৩৫ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য শূন্য আট শতাংশ বেড়ে চার হাজার ৪৫৩ দশমিক ২৯ পয়েন্টে অবস্থান করে।

ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক তিন দশমিক ৮২ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়ে এক হাজার তিন দশমিক ৬৫ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১১ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৬ শতাংশ কমে এক হাজার ৫০১ দশমিক ৭৮ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন ৪৯৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা কমে   দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৪০ হাজার ৪৭ কোটি ৯৬ লাখ ১১ হাজার টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ২৯৬ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩১৮ কোটি ৯৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ২২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এদিন ১০ কোটি ৬৯ লাখ ৬৫ হাজার ৫৪৯ শেয়ার এক লাখ এক হাজার ৬৪০ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫৩ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২২১টির, কমেছে ৮৬টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৬টির দর।

গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে খুলনা পাওয়ার। কোম্পানিটির ১৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে দুই টাকা ৩০ পয়সা। এরপর লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের আট কোটি ৭৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে দুই টাকা ৪০ পয়সা। স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের আট কোটি ১৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ৪৬ টাকা ৬০ পয়সা। বীকন ফার্মার  সাত কোটি ৯১ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে দুই টাকা ৩০ পয়সা। স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের ছয় কোটি ৯৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে তিন টাকা ৭০ পয়সা। এছাড়া জেনেক্স ইনফোসিসের ছয় কোটি ১১ লাখ, সিটি ব্যাংকের পাঁচ কোটি ৬৫ লাখ, ওয়াটা  কেমিক্যালের পাঁচ কোটি ৩৮ লাখ, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের পাঁচ কোটি, ইউনাইটেড পাওয়ারের চার কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।    

১০ শতাংশ বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে ন্যাশনাল ফিড মিল লিমিটেড। দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে স্ট্যান্ডার্ড  ইন্স্যুরেন্স। দর বেড়েছে ১০ শতাংশ। স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের দর ১০ শতাংশ, জাহিন স্পিনিংয়ের ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ, বিডিকমের ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ, নাভানা সিএনজির ৯ শতাংশ, প্রিমিয়ার সিমেন্টের আট দশমিক ৮২ শতাংশ, জেএমআই সিরিঞ্জের আট দশমিক ৭২ শতাংশ, সোনালী আঁশের আট দশমিক ৭২ শতাংশ, ফার্মা এইডের আট দশমিক ৫৩ শতাংশ, ওইম্যাক্সের সাত দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়েছে।      

এছাড়া সাত দশমিক ৬৯ শতাংশ দর কমে পতনের শীর্ষে উঠে আসে এ্যাপোলো ইস্পাত। ব্র্যাক ব্যাংকের দর ছয় দশমিক ৩০ শতাংশ, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের পাঁচ দশমিক ১২ শতাংশ, রেনউইক যজ্ঞেশ্বরের চার দশমিক ৫৪ শতাংশ, সমতা লেদারের চার দশমিক ২৮ শতাংশ, ইয়াকিন পলিমারের চার দশমিক ১৬ শতাংশ, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের তিন দশমিক ৩৬ শতাংশ, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের তিন দশমিক ৩৩ শতাংশ, বেক্সিমকো ফার্মার তিন দশমিক ৩১ শতাংশ ও কনফিডেন্স সিমেন্টের দর তিন দশমিক ২৯ শতাংশ কমেছে।      

অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক সাত দশমিক ২৩ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য আট শতাংশ  বেড়ে আট হাজার ১৯৫ দশমিক ১৪ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৩ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট বা দশমিক ১০ শতাংশ বেড়ে ১৩ হাজার ৫১৯ দশমিক ৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করে। কমেছে সিএসই৩০ ও সিএসই৫০ সূচক। গতকাল সর্বমোট ২২৮ কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩৯টির, কমেছে ৬৫টির, অপরিবর্তিত ছিল ২৪টির দর।

সিএসইতে এদিন ৯ কোটি ৫৪ লাখ ১৬ হাজার ৮৭৬ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৮ কোটি ৭৭ লাখ ৭৪ হাজার ২৩৮ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে জেনেক্স ইনফোসিস। কোম্পানিটির ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকা লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের সাড়ে ৬৮ লাখ টাকার, খুলনা পাওয়ারের ৪৭ লাখ, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের সাড়ে ৩৮ লাখ, বিডিকমের ৩৬ লাখ, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের ৩৬ লাখ, বেক্সিমকোর ৩৪ লাখ, আইপিডিসির ২৮ লাখ, স্কয়ার ফার্মার সাড়ে ২৩ লাখ, বীকন ফার্মার ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।