Print Date & Time : 27 June 2025 Friday 1:12 am

বছরের ব্যবধানে গড় লেনদেন কমেছে ৩৮ শতাংশ

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: বছরের ব্যবধানে আশঙ্কাজনকহারে কমে গেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল ৬১৪ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা নেমে এসেছে ৩৮১ কোটি টাকায়। বছরজুড়ে টানা দরপতন এবং শেষ দিকে করোনার প্রভাব ও ফ্লোর প্রাইসের কারণেই আশঙ্কাজনকহারে গড় লেনদেন কমে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ডিএসইতে মোট ২৩৮ কার্যদিবস লেনদেন হয়। এর মধ্যে বেশিরভাগ দিনই সূচক ছিল নি¤œমুখী। কিন্তু বছরের শেষদিকে লেনদেন ছিল গড়ে ৬০০ কোটি টাকার ওপরে। এতে বছরশেষে গড় লেনদেন দাঁড়ায় ৬১৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা। পক্ষান্তরে ২০১৯-২০ অর্থবছর করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে পুঁজিবাজার। যে কারণে এ বছর ডিএসইতে মোট লেনদেন হয় ২০৩ দিন। এই বছরে বাজারে অধিকাংশ সময়ই ছিল বড় পতন। ছিল লেনদেনের খরা। যে কারণে বছর শেষে গড় লেনদেন ৪০০ কোটি টাকার নিচে নেমে যায়। গড় লেনদেন নেমে দাঁড়ায় ৩৮১ কোটি ৬১ লাখ টাকায়। অর্থাৎ গড় লেনদেন কমেছে প্রায় ৩৮ শতাংশ।

এদিকে গত দুই বছরের বাজারচিত্রে দেখা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে একদিনে সর্বোচ্চ ১ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়। আর সর্বনিম্ন লেনদেন হয় ২৫১ কোটি টাকা। অন্যদিকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে একদিন সর্বোচ্চ লেনদেনের পরিমাণ ২ হাজার ৫৪৩ কোটি টাকা। যদিও ওই লেনদেনের ৬৪ কোটি টাকা ছাড়া পুরোটাই ছিল ব্লক মার্কেটের লেনদেন। অন্যদিকে এই বছর সর্বনি¤œ লেনদেন হয় ৩৮ কোটি টাকা। সর্বনিন্ম এই লেনদেনটি হয় ফ্লোর প্রাইসের কারণে।

গত বছরের অর্থবছরের ১৯ মার্চ বাজারের পতন ঠেকাতে ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়া হয়। ১৯ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত এভাবে লেনদেন চলতে থাকে। পরে করোনাভাইরাসের জন্য ৬৬ দিন বন্ধ থাকে লেনদেন। ৩১ মে পুঁজিবাজার চালু হওয়ার পর আবারও ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন চলতে থাকে। অর্থাৎ অর্থবছর শেষ হওয়ার আগে টানা ২৮ কার্যদিবস ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হয়। এর মধ্যে ১৩ দিনই লেনদেন ছিল ১০০ কোটি টাকার নিচে। এর প্রভাবে লেনদেন আশঙ্কাজনকহারে কমে গেছে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

এ প্রসঙ্গে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়ার কারণে অর্থবছরের শেষদিকে লেনদেন অনেক কমে যায়, যা গড় লেনদেন কমে যাওয়ায় ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া করোনার বৈরী প্রভাবও লেনদেন কমে যাওয়ার জন্য দায়ী। আশা করছি সবকিছু স্বাভাবিক হলে আবারও লেনদেন বাড়বে।

এদিকে গত লেনদেন কমে যাওয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সবাই বিপাকে পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন ব্রোকারেজ হাউস মালিকরা। কারণ লেনদেন কমে গেলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন তারা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, সেই সঙ্গে অফিস ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হয় তাদের।

এই প্রসঙ্গে ডিএসইর পরিচালক এবং মিডওয়ে সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান রকিবুর রহমান বলেন, লেনদেন কমে গেলে আমাদের বেকায়দায় পড়তে হয়। কারণ লেনদেনের ওপর নির্ভর করেই আমাদের আয়। আর সেখান থেকেই সব খরচ মেটাতে হয়। বাজারে পতন থাকার পাশাপাশি ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষদিকে করোনাভাইরাসের কারণে বাজারে লেনদেন কম হয়েছে। যে কারণেই এ বছর লেনদেন কমেছে। সবার মতো আমিও চাই লেনদেন বাড়ুক।