নিজস্ব প্রতিবেদক: বছরের শেষ কার্যদিবসে উভয় বাজারে ইতিবাচক গতিতে লেনদেন হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল ৪৬ শতাংশ কোম্পানির দর বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রধান সূচক ১৮ পয়েন্ট ইতিবাচক ছিল। বাকি দুই সূচকও ইতিবাচক গতিতে ছিল। লেনদেন বেড়েছে ১৮ কোটি টাকা। লেনদেনের শুরুতেই শেয়ার কেনার চাপে সূচক ইতিবাচক হলেও আধঘণ্টার মধ্যে সূচকের পতন শুরু হয়। এরপর সূচক বারবার ওঠানামা করতে থাকে। শেষ আধঘণ্টায় শেয়ার কেনার চাপ বাড়লে সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়। চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সব সূচক ইতিবাচক হলেও কমেছে বেশিরভাগ শেয়ারদর ও লেনদেন।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৮ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৪২ শতাংশ বেড়ে চার হাজার ৪৫২ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক দুই দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়ে ৯৯৯ দশমিক ৮২ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক এক দশমিক শূন্য এক পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৫১৩ দশমিক ৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন ৬৬০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৩৯ হাজার ৫৫১ কোটি ছয় লাখ ৩৫ হাজার টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ৩১৮ কোটি ৯৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩০০ কোটি ৭৭ লাখ ১৭ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১৮ কোটি ২২ লাখ টাকা। এদিন ১১ কোটি তিন লাখ ৭৮ হাজার ৬৭৭টি শেয়ার এক লাখ ১৫ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫৫ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৪টির, কমেছে ১৪২টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৫৯টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে খুলনা পাওয়ার। কোম্পানিটির ১৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে তিন টাকা ৭০ পয়সা। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের ১৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ৮০ পয়সা। ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর কমেছে আট টাকা ১০ পয়সা। বীকন ফার্মার সাত কোটি ৯২ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে দুই টাকা। স্কয়ার ফার্মার সাত কোটি ৯২ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে দুই টাকা ১০ পয়সা। এছাড়া স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের সাত কোটি ১৮ লাখ, ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের ছয় কোটি ৭৮ লাখ, সুহƒদ ইন্ডাস্ট্রিজের ছয় কোটি ৭৩ লাখ টাকা, সিঙ্গার বিডির ছয় কোটি, সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজের পাঁচ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
আট দশমিক ৮৫ শতাংশ বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে খুলনা পাওয়ার। দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের। দর বেড়েছে আট দশমিক ৪৫ শতাংশ। গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালের দর আট শতাংশ, এনভয় টেক্সটাইলের সাত দশমিক ৩২ শতাংশ, ইয়াকিন পলিমারের সোয়া সাত শতাংশ, এমএল ডায়িংয়ের সোয়া ছয় শতাংশ, মতিন স্পিনিংয়ের দর ছয় দশমিক ৭৫ শতাংশ, আমরা টেকনোলজিসের দর পাঁচ দশমিক ৯৩ শতাংশ, ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের দর পাঁচ দশমিক ৬৭ শতাংশ, ফার কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের দর সোয়া পাঁচ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ১১ দশমিক ১৯ পয়েন্ট বা দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়ে আট হাজার ১৮৭ দশমিক ৯১ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৯ দশমিক ২৮ পয়েন্ট বা দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়ে ১৩ হাজার ৫০৫ দশমিক ৭০ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৩০ কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৮৪টির, কমেছে ১০৭টির, অপরিবর্তিত ছিল ৩৯টির দর।
সিএসইতে এদিন ১৮ কোটি ৭৭ লাখ ৭৪ হাজার ২৩৮ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২০ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৪৬২ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে এক কোটি ৩২ লাখ টাকা।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিটির চার কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এরপরের অবস্থানগুলোতে থাকা রেকিট বেনকিজারের এক কোটি ৮৩ লাখ টাকার, জেনেক্স ইনফোসিসের ৯০ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ৮৬ লাখ, আইপিডিসির ৬০ লাখ, স্কয়ার ফার্মার ৫৮ লাখ, খুলনা পাওয়ারের সাড়ে ৩৫ লাখ, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের ৩৫ লাখ, বেক্সিমকোর ৩৪ লাখ, ডেল্টা লাইফের ২৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।