বেনাপোল কাস্টম হাউস

বছরের শেষ মাসে ৮৫ কোটি টাকা বেশি আদায়, প্রবৃদ্ধি ২৯.৩৮%

## জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৮৮৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা

## ছয়মাসে গত অর্থবছরের তুলনায় বেশি আদায় হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ২২.৭৮%

## ডিসেম্বর মাসে আদায় হয়েছে ৩৭৭ কোটি টাকা, গতবছর ছিল ২৯১ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদায়ী ২০২০ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরে বেনাপোল কাস্টম হাউস রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে। সঙ্গে বেড়েছে আহরণ বৃদ্ধি। শুধু বিদায়ী বছরের শেষ মাস নয়, প্রতিমাসেই রাজস্ব আহরণ বাড়ছে। এছাড়া বছরের শুধু শেষ মাস নয়, অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আহরণ বেড়েছে।

করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে প্রতিমাসেই রাজস্ব আহরণ জ্যামিতিক হারে বাড়বে বলে আশা করছেন এ হাউসের কর্মকর্তারা। কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক হয়নি। তবুও কর্মকর্তাদের তদারকি, কঠোর নজরদারি বৃদ্ধির ফলে রাজস্ব আহরণ বাড়ছে।

বেনাপোল কাস্টম হাউস সূত্রমতে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয়মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে এক হাজার ৮৮৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। যা গতবছর একই সময় আদায় হয়েছিল এক হাজার ৫৩৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে গত অর্থবছর একই সময়ের চেয়ে ৩৫০ কোটি ১ লাখ টাকা বেশি আদায় হয়েছে। আর আহরণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ। শুধু ডিসেম্বর মাসে আদায় হয়েছে ৩৭৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের একই মাসে আহরণ হয়েছে ২৯১ কোটি ৮২ লাখ টাকা। আহরণ বেড়েছে ৮৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

সূত্র জানায়, বেনাপোল কাস্টম হাউস রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধিতে বদ্ধ পরিকর। আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি ও শুল্কফাঁকি রোধে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। করোনার কারণে এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ কমে গেছে। তবে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে আমদানি-রপ্তানি, বাড়ছে রাজস্ব আহরণ। তবে সুযোগসন্ধানী একশ্রেণির অসাধু আমদানিকারক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের সহায়তায় রাজস্ব ফাঁকি দিতে সব সময় তৎপর। বিশেষ করে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে এ রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। যদিও ফাঁকি রোধে তৎপরতা বাড়িয়েছে বেনাপোল কাস্টম হাউস। তার ফলও আসতে শুরু করেছে।

এরইমধ্যে দেড় মাসে প্রায় অর্ধশতাধিক আমদানিকারকের মিথ্যা ঘোষণার অতিরিক্ত পণ্য আটক, অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়, জরিমানা ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গত পাঁচ মাসে বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকায় ছয়টি সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করা হয়েছে। চার সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। বাতিল করা এজেন্টগুলো হলো রিমু এন্টারপ্রাইজ, তালুকদার এন্টারপ্রাইজ, এশিয়া এন্টারপ্রাইজ, সানি ইন্টারন্যাশনাল, মদিনা এন্টারপ্রাইজ, মুক্তি এন্টারপ্রাইজ ও রিয়াংকা এন্টারপ্রাইজ।

অপরদিকে, বেনাপোল কাস্টম হাউসে বাজেয়াপ্ত অনিলামযোগ্য ৫৬ টন পণ্য ধ্বংস করা হয়েছে। ধ্বংস করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে-আতশবাজি, মদ, সিগারেট, ওষুধ, প্রসাধনী প্রভৃতি। এনবিআরের স্থায়ী আদেশ (আদেশ-৯৩/২০১৯/কাস্টমস, ২০/০৬/২০১৯) অনুযায়ী ২ অক্টোবর পৃথকভাবে এসব পণ্য ধ্বংস করা হয়। আহ্বায়ক কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার ড. মো. নেয়ামুল ইসলামসহ অন্যান্য সব সদস্যের উপস্থিতিতে এ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। বেনাপোল কাস্টম হাউসের ইতিহাসে সর্বপ্রথম এত বেশি ঝঁকিপূর্ণ পণ্য ধ্বংস করা হয়।

অপরদিকে, আমদানি-রপ্তানি গতিশীল ও সহজতর করতে হাউসের কার্গো শাখার এন্ট্রি গেটে একটি পয়েন্টে এন্ট্রি কার্যক্রম চালু করা হয়। এর আগে কাস্টমস, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ইএই আলাদাভাবে এন্ট্রি করার কারণে সময় বেশি লাগত যা আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত হতো। বিগত প্রায় ১০ বছর যাবত এভাবে চলছিল। দফায় দফায় আলোচনা করে এ সমস্যা সমাধান করা হয়। আমদানি-রফতানি গতিশীলকরণে এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. আজিজুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, ‘রাজস্ব আহরণের পরিবেশ সৃষ্টি করে আমরা রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর চেষ্টা করছি। রাজস্ব ফাঁকি রোধে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। আমার টিম কঠোর পরিশ্রম করছেন। তার ফলও আমরা পাচ্ছি। সেজন্য বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরেও রাজস্ব আহরণ ও প্রবৃদ্ধি-দুই বেড়েছে।’

আরো পড়ুন-

নভেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব আহরণ প্রবৃদ্ধি ২১ শতাংশ

###

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০