বছরে অন্তত দুটি ভালো মানের কোম্পানি আনতে হবে

প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে শেয়ার বিজের নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো:

নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্রামীণফোন যখন পুঁজিবাজারে আসে, সে সময় বাজার বেশ ভালো অবস্থানে গিয়েছিল। দেশে অনেক ভালো মানের কোম্পানি রয়েছে। তাদের যদি পুঁজিবাজারে আনা যায়, সেক্ষেত্রে পুঁজিবাজার আরও শক্তিশালী হবে। বছরে অন্তত ভালো মানের দুটি কোম্পানি বাজারে আনতে হবে।   ইউনিলিভারের মতো বহুজাতিক কোম্পানি আনা গেলে বাজার অনেক ভালো অবস্থানে উঠে যাবে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।

খুজিস্তা নূর-ই-নাহারীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন আইনজীবী ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক হাসান মাহমুদ বিপ্লব এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সালাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, এফসিএ।

হাসান মাহমুদ বিপ্লব বলেন, পুঁজিবাজার কয়েকটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। গত নভেম্বর পর্যন্ত পুঁজিবাজার ভালো অবস্থানে ছিল। সবাই আশা করেছিলেন, নতুন বছরে পুঁজিবাজার আরও ভালোর দিকে যাবে। কিন্তু ক’দিন আগে বিএনপি চেয়ারপারসনকে একটি মামলায় গ্রেফতার করা হলে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কা থেকে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। দ্বিতীয়ত, ব্যাংকগুলোতে রয়েছে তারল্য সংকট। ব্যাংকগুলো এডি রেশিও’র সীমা অতিক্রম করে বিনিয়োগ করায় তারল্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় নতুন তিনটি ব্যাংককে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বড় সমস্যা হচ্ছে আমাদের ব্যাংকের নীতিনির্ধারকদের ব্যর্থতা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে প্রতিবছর অনেক ভর্তুকি দিতে হয়। আবার হলমার্ক কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত ব্যাংকগুলো। এর মধ্যে আবার নতুন করে তিনটি ব্যাংককে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আবার দেখা যাচ্ছে, দেশের বড় কোম্পানিগুলো খুব সহজেই ব্যাংক থেকে ঋণ পাচ্ছে; কিন্তু সে ঋণ ঠিকমতো আদায় করতে পারছে না। এর ফলে ব্যাংকগুলো বড় ধরনের তারল্য সংকটে পড়েছে।

তিনি বলেন, গ্রামীণফোন যখন আসে, তখন পুঁজিবাজার বেশ ভালো অবস্থানে গিয়েছিল। বাংলাদেশে অনেক ভালো মানের কোম্পানি রয়েছে। তাদের যদি পুঁজিবাজারে আনা যায়, সেক্ষেত্রে পুঁজিবাজার আরও শক্তিশালী হবে। বছরে কমপক্ষে ভালো মানের দুটি কোম্পানি আনতে হবে। বিশেষ করে যদি বহুজাতিক কোম্পানি ইউনিলিভারকে আনা যায়। অনেক ভালো মানের কোম্পানি ভালো আয় করা সত্ত্বেও হঠাৎ করে এত কম লভ্যাংশ দিল এ বছর। এটা কিন্তু বাজারে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। আর আমাদের এখন দুটি সেক্টরে খুব বদনাম হচ্ছে। একটি শিক্ষা, অন্যটি অর্থনীতি। অর্থনীতিতে  লুটপাট ও পুঁজিবাজারে পতন এবং শিক্ষাক্ষেত্রে চলছে প্রশ্নপত্র ফাঁসের উৎসব। এ দুটি জায়গায় পরিবর্তন আনতে হবে।  কারণ আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

সালাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমরা কয়েক বছর ধরে শুনে আসছি ব্যাংকগুলোতে বাড়তি তারল্য রয়েছে। অর্থাৎ মানি মার্কেটে অনেক তারল্য প্রবাহ ছিল। হঠাৎ করে কিছু কারণে মানি মার্কেটে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে।

আমাদের রফতানি খাত ভালো অবস্থানে যাচ্ছিল; কিন্তু ক’মাস ধরে রফতানির চেয়ে আমদানি বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের বিদেশি বিনিয়োগ দরকার। তবে প্রবাসীদের থেকে আমরা একটা বড় আয় করতে পারলেও সেটা পর্যাপ্ত নয়। এখন আমদানি এত বেশি করতে হচ্ছে যে, উল্টো বাংলাদেশ ব্যাংককে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে ওই জায়গায় তারল্য সংকট দেখা যাচ্ছে। পুঁজিবাজারে ভালো মানের কোম্পানিকে আনতে হবে। তারা না আসতে চাইলেও বাধ্য করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগ যদি আস্থা ফেরাতে না পারে, তাহলে বাজার ভালো হবে না। এর জন্য নীতিনির্ধারকদের কাজ করতে হবে। মানি মার্কেট পরিচালনা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং পুঁজিবাজার পরিচালিত হয় বিএসইসির তত্ত্বাবধানে। কিন্তু প্রায়ই তাদের কর্মকাণ্ডে সমন্বয়ের অভাব দেখা যায়। এ জায়গাটায় যদি সঠিকভাবে সমন্বয় করা যায়, তাহলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে।

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০