Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 7:28 pm

বছরে তিনগুণ লাভ দেয়ার প্রলোভন

নিজস্ব প্রতিবেদক: মোবাইল ফোন অ্যাপ ও ব্যাংকিং সার্ভিস ব্যবহার করে অবৈধ মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসায় জড়িত সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল দুপুরে সিআইডির সদর দপ্তরে অতিরিক্ত ডিআইজি (ঢাকা মেট্রো) ইমাম হোসেন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘একটি চক্র মোবাইল অ্যাপস ও ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ব্যবহার করে অবৈধভাবে এমএলএম ব্যবসা করে আসছিল। সাধারণ মানুষদের অধিক লাভের প্রলোভন দেখিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বিকাশ ও নগদের মতো ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ব্যবহার করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়েছে তারা। সিআইডিতে অনেক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন। ঢাকা মেট্রো পশ্চিমের একটি টিম দীর্ঘদিন বিষয়টি মনিটর করে।’

চক্রের মূলহোতা মো. মাহাদী হাসান মল্লিক, মিজানুর রহমান ওরফে ব্রাভো মিজান, মো. আবুল হোসেন পুলকসহ সাতজনকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

গ্রেপ্তার অন্য আসামিরা হলেন মো. মহিউদ্দিন জামিল (৩৮), মো. সাইফুল ইসলাম আকন্দ (৪২), মো. কভেজ আলী সরকার (৩৫) ও মো. শাহানুর আলম শাহীন (৪২)।

অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, ‘আসামিরা প্রথমে বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় আগ্রহীদের ভরপেট খাওয়াত আগে। তারপর চটকদার অফারের কথা বলে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করত। হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারে গ্রুপ তৈরি করে প্রচারণা চালাত সারাদেশে। সেখানে তারা এমএলএম কোম্পানির অ্যাপের লিংক পাঠাত।’

আনজাম গ্লোবাল লিমিটেড ও পিপিসি গ্লোরি ডটকম নামের দুটি এমএলএম কোম্পানি চালু করে দেশের অন্তত ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।

কোম্পানিটির বিরুদ্ধে ঢাকার উত্তরার পশ্চিম থানায় মামলা হয়। এরপর তারা আরও দুটি ওয়েবসাইট খুলে অবৈধ এমএলএম ব্যবসা শুরু করে। সেখানেই বছরে তিনগুণ মুনাফার প্রলোভন দেখাতে থাকে তারা।

কয়েক দিন আগেও গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের পাঁচ থেকে ছয়জন কক্সবাজারের বিলাসবহুল একটি হোটেলে প্রোগ্রাম করে সাধারণ মানুষকে বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করে বলে জানান সিআইডির কর্মকর্তারা।

নির্দিষ্ট টাকার অঙ্ক নিয়ে একটি আইডি নম্বর দিত তারা। বলা হতো ওই আইডি নম্বরে বিনিয়োগ করলে দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক ও বার্ষিক মুনাফা মিলবে। ওই বিনিয়োগকারীদের হাত ধরে নতুন কেউ এলে মুনাফাও বাড়তে থাকবে। এভাবে চেইন মুনাফার লোভ দেখিয়ে অবৈধ এমএলএম ব্যবসা চালিয়ে আসছিল তারা।

চক্রের অনেকে আগে ডেসটিনিতে কাজ করত বলে জানিয়েছে সিআইডি। এছাড়া তাদের অনেকে অবৈধ পন্থায় ম্যানপাওয়ার ব্যবসাতেও জড়িত বলে জানা গেছে।

তাদের কাছ থেকে নানা ব্র্যান্ডের ৯টি মোবাইল ফোন, ২০টি সিমকার্ড, একাধিক ব্যাংকের চেকবই, এটিএম কার্ড, ৬২ হাজার টাকা ও অনেক কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে।