নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে মাদক ব্যবহারকারীদের সংখ্যা প্রতিনিয়তই বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ লাখে। এ হিসাবে পুরুষের সঙ্গে নারীও রয়েছেন। মাদকসেবীদের মাধ্যমে বছরে ৬০ হাজার কোটি টাকা অপচয় হচ্ছে। দেশে ব্যবহƒত এসব মাদকের বড় উৎস সীমান্তের বাইরে। এই মাদক আনতে দেশ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। এমন তথ্য উঠে এসেছে এক পর্যবেক্ষণে।
গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে ‘মাদক নিয়ন্ত্রণে ডোপ টেস্ট এই মুহূর্তে করণীয়’ শীর্ষক মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে এ হিসাব দেওয়া হয়। শিশু অধিকার-বিষয়ক সংসদীয় ককাস এবং সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করে।
এতে মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, প্রতিদিন গড়ে একজন মাদকাসক্ত ১৫০ টাকার মাদক গ্রহণ করে। এই হিসেবে একজন মাদকাসক্ত বছরে ৫৪ হাজার ৭৫০ টাকা মাদকের জন্য ব্যয় করে। দেশে ২৫ লাখ মাদকাসক্ত ধরা হলে তারা বছরে ১৩ হাজার কোটি টাকার মাদক সেবন করে। এতে পাচার হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। বিগত ১০ বছরে মাদকাসক্তির কারণে দুইশ’ মা-বাবা খুন হয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শামসুল হক টুকু অনুষ্ঠানে বলেন, পুলিশের ডোপ টেস্ট শুরু হয়েছে। গাড়িচালকদের ডোপ টেস্ট শুরুর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। চাকরি ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট শুরুর কার্যক্রম চলছে। এর পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের ডোপ টেস্টের আওতায় আনতে হবে। এতে মাদকের চাহিদা কমবে। ফলে দেশে মাদকের প্রবেশও কমবে। আমার নির্বাচনী এলাকায় আমি ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কমিটিতে মাদকাসক্তদের রাখতে দিইনি। এটা সারা দেশে করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আহসানুল জব্বার বলেন, মাদকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। তারপরও বলব, মাদক নির্মূলে আমরা বসে নেই। আমরা চেষ্টা করছি, কীভাবে মাদকের থাবা থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করা যায়।
সচেতনতার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, দেশে মাদকের চাহিদা কমলে জোগানও কমে যাবে। তাই সন্তানরা যাতে মাদকাসক্ত না হয়ে পড়ে, সেজন্য অভিভাবকদের সচেতন হওয়া দরকার। সবাই সচেতন হলে মাদকমুক্ত সমাজ গড়া সম্ভব হবে।
স্কাস চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পার্লামেন্ট জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক নিখিল ভদ্র। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পার্লামেন্ট নিউজ বিডি ডটকমের সম্পাদক সাকিলা পারভীন ও একাত্তর টিভির বার্তা সম্পাদক পলাশ আহসান।