Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 8:05 pm

বড়দিনে পর্যটকদের ভিড় কক্সবাজারে

এস এম রুবেল, কক্সবাজার: বড়দিন উপলক্ষে অন্যান্য দিনের চেয়ে পর্যটক বেড়েছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে। সৈকতের তিনটি পয়েন্টে পর্যটকদের আনাগোনা দেখা গেছে। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই কক্সবাজার জেলার বাইরে থেকে আগত। তবে কাক্সিক্ষত পর্যটক আসেনি বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। এর জন্য তারা রাজনৈতিক অস্থিরতাকে দায়ী করছেন।

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে গিয়ে দেখা গেছে, লাবনী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে পর্যটকদের দেখা মিলেছে। তবে ডায়াবেটিস পয়েন্টে তেমন পর্যটকদের দেখা মিলেনি। এই পয়েন্টে সৈকতের ভাঙন থাকায় পর্যটকদের কাছে পয়েন্টটি অপছন্দের জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমুদ্রসৈকতের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে সবচেয়ে বেশিই পর্যটক নেমেছে সুগন্ধা পয়েন্ট দিয়ে। পর্যটকদের কেউ সাগরে গোসল করছে, কেউবা বাচ্চাদের সঙ্গে সৈকতের বালিয়াড়িতে খেলা করছে, আবার কেউ ঘোড়ায় চড়ার দরদাম করছে। আবার কেউ কেউ বিচ বাইকে চড়ে সমুদ্রসৈকতটি ঘুরে দেখছে। সৈকতের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরাও পেয়ারা, আমড়া, শসা, আনার, বিভিন্ন আচারসহ ঝালমুড়ি বিক্রি করছে।

আরও দেখা গেছে, সমুদ্রে নামার তিনটি পয়েন্টে সি লাইফ গার্ডের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। সাগরে নামতে পর্যটকদের বিভিন্ন সতর্কতা বাণী দেয়াসহ কোনো পর্যটক বিপদে পড়ছে কি না সেদিকে নজর রাখছে তারা। সমুদ্রে গোসলে নেমে কেউ বিপদে পড়লেই ওয়াকিটকির সাহায্যে লাইফ গার্ডের সদস্যরা খবর পেয়ে ছুঁটে আসেন বিপদগ্রস্ত পর্যটককে উদ্ধারের জন্য। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ সৈকত এলাকা চিহ্নিত করে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়েছে জেলা প্রশাসন।

লাইফ গার্ডের কয়েকজন সদস্য জানান, উদ্ধার সরঞ্জাম নিয়ে তারা সবসময় প্রস্তুত থাকেন পর্যটকদের সহযোগিতা করার জন্য। কোনো পর্যটক বিপদে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে মনে হলে তারা ছুটে যান। তবে উদ্ধারকাজ চালাতে আরও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি লাগবে বলেও জানান তারা।

ঢাকা থেকে আগত শাহাদত, মুশফিক, শাহরিয়ার জানান, বড়দিনের ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত দেখতে এসেছেন। তারপর ইনানি ও হিমছড়ি সৈকত ঘুরে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাবেন। সেখানে গিয়ে সূর্যাস্ত দেখবেন।

পরিবার নিয়ে খুলনা থেকে ঘুরতে এসেছেন হারুনুর রশিদ। সঙ্গে স্ত্রীসহ দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। সমুদ্রের প্রতি আলাদা টান থাকায় সময় পেলেই কক্সবাজার চলে আসেন তিনি। কিন্তু কক্সবাজার সৈকতে হকারদের দৌরাত্ম্য, শরীর মেসেজসহ ভিক্ষুকদের আনাগোনা এত বেশি যে, যা রীতিমতো বিরক্তিকর।

হোটেল মোটেল অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ জানান, বড়দিনের ছুটিতে প্রায় ৪০ হাজার পর্যটক কক্সবাজারের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে এসেছেন। তারা সমুদ্রসৈকতের পাশাপাশি ইনানী, হিমছড়ি, রামু, মহেশখালী দ্বীপ ঘুরে দেখতে যান। পরিবেশ পরিস্থিতি ঠিক থাকলে আরও পর্যটক আসত বলে দাবি তার।

জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। কোনো পর্যটক যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে। যে কোনো ধরনের অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।