বড় অর্থায়নে পুঁজিবাজার সবচেয়ে উপযুক্ত ক্ষেত্র: বিএসইসি চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক: বড় ধরনের অর্থায়নের জন্য পুঁজিবাজারকে সবচেয়ে উপযুক্ত ক্ষেত্র হিসেবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, বাণিজ্যিকভাবে সফল প্রজেক্টের জন্য ব্যবসায়ীরা আগ্রহী হলে বিএসইসি পরিবেশবান্ধব প্রজেক্টে অর্থায়নের সুযোগকে কাজে লাগাতে সর্বাত্মক সহায়তা করবে।

কক্সবাজারে বাংলাদেশ ওশেনোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট আয়োজিত ‘ব্লু ইকোনমি: ফান্ডিং প্রসপেকটস অব ক্যাপিটাল মার্কেট’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল রোববার বিএসইসি থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ওশেনোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশিদ

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএসইসি কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সুনীল অর্থনীতিকে যথাযথভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি প্রসঙ্গে সিঙ্গাপুরের উদাহরণ তুলে ধরেন। বিনিয়োগকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে সিঙ্গাপুর সব ক্ষেত্রে উন্নয়নকে সম্ভব করেছে তা ব্যাখ্যা করেন তিনি।

বিজ্ঞানীদের বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আপনাদের গবেষণা করতে হবে কীভাবে সমুদ্রের সম্পদ ব্যবহার ও কাজে লাগানো সম্ভব করা যায়। সবকিছুর মধ্যেই সম্পদ রয়েছে, আমাদের খুঁজে বের করতে হবে সম্পদের মাঝে থাকা সম্ভাবনাকে এবং সেটাকে কাজে লাগাতে হবে।

তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীরাও বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতিতে বিনিয়োগে আগ্রহী। বিদেশি কোম্পানিগুলো দেশে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে অংশগ্রহণ করতে চায়। বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনাময় দেশ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশের দুই-তৃতীয়াংশ ভূমির সমপরিমাণ সমুদ্র এলাকা পাওয়া সম্ভব হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সুনীল অর্থনীতির জন্য বেসরকারি খাত ও পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক অর্থায়ন সারা পৃথিবীতে হচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে সফল করার মাধ্যমে আইডিয়াকে কাজে লাগাতে হবে। বাণিজ্যিকভাবে সফল করা গেলে শুধু সরকারের অর্থায়নের ওপর নির্ভরতা কমে আসবে এবং বেসরকারি খাতে অর্থায়নের সুযোগ বহুগুণে বাড়বে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বড় ধরনের অর্থায়নের জন্য পুঁজিবাজার সবচেয়ে উপযুক্ত ক্ষেত্র। বাণিজ্যিকভাবে সফল প্রজেক্টের জন্য ব্যবসায়ীরা আগ্রহী হলে বিএসইসি পরিবেশবান্ধব প্রজেক্টে অর্থায়নের সুযোগকে কাজে লাগাতে সর্বাত্মক সহায়তা করবে।

সবাইকে ব্লু বন্ড ও গ্রিন বন্ড নিয়ে ভাবার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, সম্পদকে ব্যবহার করে জিডিপিতে অবদান রাখতে হবে, উন্নত দেশ হয়ে উঠার জন্য নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। সামষ্টিক অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার ঈপ্সিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবে।

সেমিনারে বাংলাদেশ ওশেনোগ্রাফ্রিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশিদ ‘বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা এবং সুনীল অর্থনীতি উন্নয়নে সরকারের পরিকল্পনা’ শীর্ষক প্রেজেন্টেশন উপস্থাপনা করেন। তিনি সুনীল অর্থনীতি, বিভিন্ন অর্থনীতিতে এর অবদান, সুনীল অর্থনীতির বৈশ্বিক অবস্থা, বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতির অর্থনৈতিক মূল্য, সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলো, বাংলাদেশে উপকূল এলাকা ও সুনীল অর্থনীতি নিয়ে সরকারের গৃহীত জাতীয় পরিকল্পনা ও সুনীল অর্থনীতির কার্যক্রম বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ওশেনোগ্রাফ্রিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম ও পদক্ষেপ, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সুনীল অর্থনীতি, পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা-২০৪১ এ সুনীল অর্থনীতি পরিকল্পনা প্রভৃতি উপস্থাপন করেন।

সেমিনারে ‘ব্লু ইকোনমি: ফান্ডিং প্রসপেকটস অব ক্যাপিটাল মার্কেট’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থান করেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম। তিনি বৈশ্বিক ও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সুনীল অর্থনীতির নানা দিক তুলে ধরেন। বিশ্বজুড়ে সুনীল অর্থনীতির ক্ষেত্র এবং বাংলাদেশে এর সম্ভাবনা তথ্য-উপাত্ত সহকারে উপস্থাপন করেন তিনি। সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে কীভাবে দেশের পুঁজিবাজারকে ব্যবহার করা সম্ভব, সে সম্পর্কেও বলেন তিনি।

সেমিনারে বিএসইসি কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, অনেক দেশে সুনীল অর্থনীতির উন্নয়নে অন্যতম বাধা হিসেবে দেখা যায় রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব। কিন্তু বাংলাদেশে এ খাতের উন্নয়নে সরকারের ইচ্ছা ও প্রচেষ্টা রয়েছে।

 

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০