নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস গতকাল পুঁজিবাজারে বড় দরপতন দেখা গেছে। পতনের ধাক্কায় মৌলভিত্তিসম্পন্ন বড় তিন খাতের শতভাগ কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হয়েছে। খাতগুলো হলোÑসাধারণ বিমা, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি। পুঁজিবাজারে ছোট ছোট খাতের কোম্পানির শতভাগ দরপতন প্রায়ই দেখা যায়। কিন্তু মৌলভিত্তির বড় খাতের কোম্পানিগুলোর শতভাগ দরপতন খুব একটা দেখা যায় না।
গতকাল রোববার প্রধান পুঁজিবাজারের ঢাকা স্টক একচেঞ্জ ডিএসইসি সূচক কমেছে ১১৫ পয়েন্ট। তার আগে গত মার্চে এক দিনে সর্বোচ্চ সূচক পড়েছিল ১৬৮ পয়েন্ট। কিন্তু সেসব দিনেও বিমা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে শতভাগ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। খাত তিনটিতে কেবল শতভাগ শেয়ারদর কমেনি; খাত তিনটির বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ক্রেতা সংকটে পড়ে সার্কিট ব্রেকারে আটকে ছিল।
সর্ববৃহৎ খাত সাধারণ বিমার ৪০টি কোম্পানির মধ্যে ৪০টিরই দরপতন হয়েছে। সবচেয়ে বেশি দর কমেছে ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের ২ টাকা ২০ পয়সা বা ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ, ফনিক্স ইন্স্যুরেন্সের ২ টাকা ১০ পয়সা বা ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ, জনতা ইন্স্যুরেন্সের ১ টাকা ৭০ পয়সা বা ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের ৪ টাকা ২০ পয়সা ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের ৩ টাকা ৭০ পয়সা বা ৪ দশমিক ৯১ শতাংশ, প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের ৩ টাকা ৬০ পয়সা বা ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের ৪ টাকা ২০ পয়সা বা ৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ, প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের ৩ টাকা ৪ দশমিক ৭২ শতাংশ। কোম্পানিগুলোর শেয়ার লেনদেনের শেষভাগে ক্রেতাশূন্য অবস্থায় ছিল।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ২১টি কোম্পানির মধ্যে সবগুলোরই দরপতন হয়েছে। এ খাতেরও শতভাগ কোম্পানির দরপতন হয়েছে। সবচেয়ে বেশি দর কমেছে আরডি ফুডের ২ টাকা ৫০ পয়সা বা ৫ শতাংশ, বঙ্গজ লিমিটেডের ৭ টাকা ৫০ পয়সা বা ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ, রহিমা ফুডের ১২ টাকা ১০ পয়সা বা ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ, এমারাল্ড অয়েলের ১ টাকা ৭০ পয়সা বা ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ, এএমসিএল-প্রাণের ১২ টাকা ৪০ পয়সা বা ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ। কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর ক্রেতা সংকটের সর্বনি¤œ ধাপে লেনদেন হয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২৩টি কোম্পানির মধ্যে সবগুলো দরপতন হয়েছে। অর্থাৎ এই খাতে আজ শতভাগ কোম্পানির দরপতন হয়েছে। সবচেয়ে বেশি দর কমেছে জিবিবি পাওয়ারের ১ টাকা ১ পয়সা বা ৫ শতাংশ, এনার্জিপ্যাকের ১ টাকা ৭০ পয়সা বা ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস ৬১ টাকা ৬০ পয়সা বা ৪ দশমিক ২৪ শতাংশ, সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের ৮ টাকা ৪০ পয়সা বা ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ। এসব শেয়ার ক্রেতা সংকেটর সর্বনি¤œ দরে লেনদেন হয়েছে। এছাড়া ছোট খাতের মধ্যে পেপার ও প্রিন্টিং, সেবা ও আবাসন, ভ্রমণ ও অবকাশ, ট্যানারি এবং পাট খাতে শতভাগ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে।
রোববার ডিএসইতে ৬৮২ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে; যা আগের দিন থেকে ১৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বেশি। বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ১১৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৬ হাজার ১৪২ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ২১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৬১ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৩৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৭৭ পয়েন্টে।
অন্য বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জ সিএসই সার্বিক সূচক সিএসপিআই ৩৮২ পয়েন্ট কমেছে। সিএসইতে ১৭ কোটি ৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।