Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 3:02 am

বড় পতন সামলেছে পুঁজিবাজার, সূচক কমল ৯৬ পয়েন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার পর গতকাল ছিল প্রথম কার্যদিবস। এদিন বাজার ঘিরে নানা শঙ্কা ও অস্থিরতা বিরাজ করছিল বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)  দিনের লেনদেন শুরুর প্রথম ১০ প্রধান মূল্যসূচক ২১৪ পয়েন্ট কমে যায়। তবে সময়ের সঙ্গে বিক্রির চাপ কিছুটা কমে; দাম কমার তালিকা থেকে বেরিয়ে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নেয়।  এতে গতকাল রোববার দিনের লেনদেন শেষে সূচক ৯৬ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৪০ পয়েন্টে নেমে আসে। একই সঙ্গে ডিএসইতে আগের কার্যদিবসের চেয়ে লেনদেন কমে ৪৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এদিন বাজারে সূচকের পতন আগে থেকেই অনুমেয় ছিল। তবে তুলনামূলকভাবে বাজার ভালো আচরণ করেছে।  স্বচ্ছ লেনদেনের মধ্য দিয়ে সূচকের ওঠানামা বাজারের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। হস্তক্ষেপ করে বাজার ধরে রাখা নয়, লেনদেনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা নিয়ন্ত্রক সংস্থার দায়িত্ব।

পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতন দেখা দিলে ২০২২ সালের জুলাই মাসে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দামে ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে কমিশনের বেঁধে দেয়া এই সিদ্ধান্ত নানা আলোচনা-সমালোচনার মুখে পড়ে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার বিকালে পুঁজিবাজার থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩৫ প্রতিষ্ঠানে ফ্লোর প্রাইস রেখে বাকি সব প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়া হয়।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ৫৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯৬টির। আর ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৯৬ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৪০ পয়েন্টে নেমে আসে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

প্রধান মূল্যসূচকের পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৮৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬৩৭ কোটি ১১ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৪৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম শেয়ার। দিনভর কোম্পানিটির ২৪ কোটি ৫৮ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের ১৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৮ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে ছিল দেশবন্ধু পলিমার।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ছিলÑ সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, ব্র্যাক ব্যাংক, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।

অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৪৭৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হওয়া ২১৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমে ১৫৮টির এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা।