নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে কভিডে শনাক্তের হার দুই সপ্তাহের মধ্যে কয়েকগুণ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা এবিএম খুরশীদ আলম। তিনি বলেন, ‘দুই সপ্তাহ আগেও দুই শতাংশের নিচে ছিল। তা এখন ২০ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আক্রান্তের হার বেড়ে যাওয়া অশুভ ইঙ্গিত। আমরা যদি নিজেদের সংবরণ না করি, এটাকে প্রতিহত করার চেষ্টা না করি তবে পরে বিপদের বড় আশঙ্কা আছে।’ গতকাল সোমবার বিকালে এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘অনেকে ভাবছে ওমিক্রনে ভয়ের কারণ নেই। কারণ এখানে মৃত্যুর হার কম। আমাদের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং আইইডিসিআর জিনোম সিকোয়েন্স করছে। তারা বলছেন, ডেল্টা ধরনের সংক্রমণের হার বেশি। ওমিক্রন বাড়ছে, তবে সেটা ডেল্টার মতো না। ঢাকায় ওমিক্রনের হার বেশি। তবে সামগ্রিকভাবে ডেল্টার প্রাধান্য সব জায়গায় বেশি। অন্যান্য শহরে ওমিক্রন নেই। এখানে যেটা বাড়ছে সেটা ডেল্টা ধরন। এ ধরনের পরিণতি আপনারা আগেই দেখেছেন।’
তিনি বলেন, ‘এ সময় কভিডে মৃত ব্যক্তিদের ৮০ শতাংশ টিকা নেননি। বাকি ২০ শতাংশের নানা ধরনের দীর্ঘস্থায়ী রোগ ছিল। তবে এখনও কেউ ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন কি না, সে তথ্য স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে নেই। জিনোম সিকোয়েন্সিং করতে ১৪-১৫ দিন সময় লাগে।’
কভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছেÑএমন প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, ‘কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলো বন্ধ করা হয়নি। সেগুলো প্রস্তুত আছে। শনাক্তের হার কমে আসায় শয্যাগুলো অন্য রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল। তবে এখন সংক্রমণ বাড়ছে। তাই আবারও সেগুলো সংযুক্ত করা হবে। সব হাসপাতাল তৈরি আছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন দেশে সামগ্রিক সংক্রমণের সংখ্যা ২০ শতাংশের বেশি। সংক্রমণের আশঙ্কার ওপর ভিত্তি করে টেস্ট বাড়ছে। হাসপাতাল প্রস্তুত, সরকারি হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে।’
সচেতনতার তাগিদ দিয়ে মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় জনসমাগম বন্ধ করতে হবে। মাস্ক পরতে হবে, সামাজিক বিধি মেনে চলতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে দ্রুততার সঙ্গে টিকা নিতে হবে।’
বুস্টার ডোজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা বয়স্ক ও ফ্রন্টলাইনারদের বুস্টার ডোজের টিকা দিচ্ছি। বুস্টার ডোজের বয়সসীমা ৫০ বছর করা হয়েছে। টিকা কার্যক্রমকে বেগবান করতে আমরা আরও পদক্ষেপ নিয়েছি।’
ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।