নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। ইতোমধ্যে চলতি বছরের প্রথম সাড়ে সাত মাসে ২০ হাজারের বেশি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। আর এই সময়ে মারা গেছেন শতাধিক। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গু জ্বরের আগে যে লক্ষণ ছিল তা সম্প্রতি বদলে গেছে।
গতকাল সোমবার সরকারি তথ্যবিবরণীতে বলা হয়, বিশেষজ্ঞরা সম্প্রতি ডেঙ্গুর লক্ষণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাদের মতে ডেঙ্গুর সাম্প্রতিক লক্ষণগুলো আগে যেমন ছিল, এখন তা পাল্টেছে।
আগে ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো ছিল শুরুতেই জ্বর আসত; শরীরে ব্যথা; মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা; চামড়ায় লালচে দাগ। আর সম্প্রতি ডেঙ্গুর লক্ষণগুলোর ক্ষেত্রে প্রায় সময় জ্বর আসছে না; প্রাথমিক পর্যায়েই ডায়ারিয়া ও শ্বাসকষ্ট; পেটব্যথা; বমি; পেটে-বুকে পানি আসা; শরীরে খিঁচুনি।
এদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকায় হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বিশেষ করে রাজধানীর হাসপাতালগুলো ডেঙ্গু রোগীতে ঠাসা। যে হারে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ তা অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হতে পারে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপপ্তরের তথ্য মতে, ঢাকায় সরকারি-বেসরকারি ৫৩টি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, এসএসএসএমসি ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কভিড-১৯ হাসপাতাল, বেসরকারি হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে অনেক রোগী ভর্তি রয়েছে। বড় হাসপাতালগুলোয় জায়গা না হয়ায় মেঝেতে থেকেই চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে অনেক রোগীকে।
ক্রমবর্ধমান ডেঙ্গু রোগীর সেবা নিশ্চিত করতে রাজধানীর মহাখালীর ৮০০ শয্যাবিশিষ্ট ডিএনসিসি হাসপাতালকে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার।
গতকাল সরকারি তথ্যবিবরণীতে বলা হয়, সব সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ ডেঙ্গু কর্নার চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি মেডিকেল কলেজ ও বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোয় ডেঙ্গু ডেডিকেটেড ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে।
এর আগে সব সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু টেস্ট ১০০ টাকার পরিবর্তে ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া সব হাসপাতালে চিকিৎসকদের ডেঙ্গু বিষয়ক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।