নিজস্ব প্রতিবেদক: মিথ্যা তথ্য সরবরাহ ও প্রচারের অভিযোগে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন পুলিশে তার সাবেক সহকর্মী কারাবন্দি বাবুল আক্তার। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত অব্যাহতির এই আদেশ দেন। বাবুলের পাশাপাশি তার বাবা পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ মিয়াও এ মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।
মৌখিক আদেশ বিচারক বলেন, বাবুল ও তার বাবার বিরুদ্ধে বাদীর আনা অভিযোগ সঠিক বলে প্রতীয়মান হচ্ছে না। এ কারণে তাদের অব্যাহতি দেয়া যুক্তিসম্মত। মামলার আসামি ওয়াদুদ মিয়া এবং বাবুল আক্তারের ভাই হাবিবুর রহমান লাবু এদিন আদালতে হাজিরা দেন। ঢাকার বাইরে কারাগারে থাকা বাবুলকে আদালতে হাজির করা হয়নি।
বাবুল ও তার বাবা অব্যাহতি পেলেও পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্রের অন্য দুই আসামি বাবুলের ভাই লাবু এবং প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিচারক আমলে নিয়েছেন।
বিদেশে থাকা ইলিয়াসের বিরুদ্ধে গ্রপ্তারি পরোয়ানা জারির পাশাপাশি বিচারক আগামী ৩১ অগাস্ট দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ঠিক করেছেন বলে ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী শামীম আল মামুন জানান। বাবুল এসপি থাকা অবস্থায় ২০১৬ সালে চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে সড়কে খুন হন তার স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু। স্ত্রী হত্যার পর বাবুল মামলা করলেও কয়েক বছর পর পিবিআই তদন্তে এসে এই খুনে জড়িত হিসেবে বাবুলকেই চিহ্নিত করে। তারপর থেকে বাবুল গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।
এর মধ্যেই ইলিয়াস ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ‘স্ত্রী খুন: স্বামী জেলে, খুনি পেয়েছে তদন্তের দায়িত্ব’ শিরোনামে একটি ভিডিও ফেইসবুকে তোলেন। তা দেখার পর ওই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার ধানমণ্ডি থানায় মামলা করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান, অতিরিক্ত আইজি বনজ মজুমদার। মামলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগ আনা হয়।
মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, কারাগারে থাকা বাবুল এবং বিদেশে অবস্থানরত ইলিয়াসসহ বাকি আসামিরা মিতু হত্যামামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত এবং পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করতে চাইছে। ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচারিত ওই ভিডিওতে পুলিশ এবং পুলিশের বিশেষায়িত তদন্ত সংস্থা পিবিআই এবং বনজ মজুমদারের সুনাম ক্ষুণœ হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয় মামলায়।
এরপর গত ৯ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমণ্ডি মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) মো. রবিউল ইসলাম চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। তা গ্রহণ করে গত ১১ মে ঢাকার মহানগর হাকিম মো. আশেক ইমামের আদালত মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দেন।