নিজস্ব প্রতিবেদক: আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য কাতার, তুরস্ক, ইরান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এর অনেকাংশ বন্দর থেকে ছাড়াতে দেরি হচ্ছে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডি-আরসিএস)।
উজবেকিস্তানের পক্ষ থেকে আরসিএসের কাছে ত্রাণসামগ্রী হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ অনুরোধ করেন সংস্থাটির মহাসচিব বিএমএম মোজাহারুল হক। গতকাল সোমবার ঢাকার মগবাজারে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠান হয়। এ সময় মধ্য এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তান আট হাজার রোহিঙ্গা পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী আরসিএসের কাছে হস্তান্তর করে। দেশটির দিল্লি কার্যালয়ে নিয়োজিত রাষ্ট্রদূত ফরহাদ আরজিয়েভ এ সময় আরসিএসের চেয়ারম্যান হাফিজ আহমদ মজুমদারের হাতে এসব ত্রাণসামগ্রী তুলে দেন। ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে মুড়ি, চিড়া, চিনি, চীনাবাদাম, বিস্কুট, শাড়ি, লুঙ্গি, ওষুধ ও পানিসহ ১৪টি প্রয়োজনীয় সামগ্রী। দেশটির কর্মকর্তারা ঢাকা থেকে এসব ত্রাণসামগ্রী কিনে কয়েকটি ট্রাকে ভর্তি করে রেড ক্রিসেন্টের হাতে তুলে দেন।
আরসিএসের চেয়ারম্যান হাফিজ আহমদ মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মানবিক সংস্থাটির ভাইস-চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. হাবিব মিল্লাত, কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট তৌহিদুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম ও মধ্য এশিয়ার উইংয়ের মহাপরিচালক নজরুল ইসলাম, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফয়জুর রহমান প্রমুখ। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব বিএমএম মোজহারুল হক।
স্বাগত বক্তব্যে বিএমএম মোজহারুল হক বলেন, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি তার বিশাল স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে নিয়ে বিপন্ন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়েছে। এ কাজে সরকারও সহযোগিতা করছে। আন্তর্জাতিকভাবে ১৯০টি দেশে এ সংস্থার সহযোগীরা ব্যাপক সাড়া দিয়েছেন। তবে বন্দর থেকে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ত্রাণসামগ্রীর ক্লিয়ারেন্সের জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষের বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।
সভায় বক্তারা বলেন, কক্সবাজারের দুটি ক্যাম্পে ৩২ হাজার নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ধাপে ধাপে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে এসেছেন। বাংলাদেশ মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিয়েছে। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ তাদের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। তবে দীর্ঘ মেয়াদে তাদের অবশ্যই নিজেদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য আন্তর্জাতিক মহলের কাছে আহŸান জানানো হয় সভায়।
বন্দরে বিদেশি ত্রাণসামগ্রী আটকে থাকার বিষয়ে ফয়জুর রহমান বলেন, এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে বৈঠক হয়েছে। সেখানে কোন বিষয়ে কার কী দায়িত্ব তা বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং যেকোনো সমস্যা সমাধানে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হবে।