বন্দরে জালিয়াতি রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিন

‘গোল্ডেন থ্রেড লিমিটেড: প্রাপ্যতা জালিয়াতি করে খালাস নেয়া হয় কাঁচামাল’ শীর্ষক যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে গতকালের শেয়ার বিজে, তাতে দেশ নিঃসন্দেহে রাজস্ব ও শুল্ক থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এখানে জালিয়াতিতে কয়েকটি পক্ষ জড়িত। প্রতিষ্ঠানের বন্ড প্রাপ্যতায় না থাকা সত্তে¡ও আমদানি করা কাঁচামাল কাগজে জালিয়াতি করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দায়ী প্রতিষ্ঠানকে অর্থদণ্ড করা হয়েছে, কিন্তু  প্রতিষ্ঠান ফাঁকি দেয়া রাজস্ব পরিশোধ করেনি। আমরা মনে করি, আমদানিকারক  প্রতিষ্ঠান, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও কাস্টমসÑপ্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই দায় রয়েছে।

অভিযোগ কম গুরুতর নয়। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স রয়েছে। লাইসেন্সে যে কাঁচামাল অন্তর্ভুক্ত (প্রাপ্যতা) নেই, সেই কাঁচামালও বন্ড সুবিধায় খালাস নেয়া হয়েছে। কাস্টমস বলছে, মূলত কাগজ টেম্পারিং করে লাইসেন্সে ওই পণ্যের প্রাপ্যতা দেখানো হয়েছে। আর এই কাগজ টেম্পারিংয়ের সঙ্গে জড়িত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। কাস্টমস যাচাই করার পর টেম্পারিং জালিয়াতি ধরা পড়েছে। প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে টেম্পারিং করে খালাস নেয়া সেই পণ্যের রাজস্ব ফাঁকির বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। সঙ্গে জালিয়াতি করায় প্রতিষ্ঠানের সব কাঁচামাল খালাস বন্ধ ও বিআইএন লক করা হয়েছে। গাজীপুরের গোল্ডেন থ্রেড লিমিটেড নামে শতভাগ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের এই জালিয়াতি ধরা পড়েছে।  কাস্টমস কিছু  সময়ে  নীরব ছিল। একসময় যাচাই করলে জালিয়াতি ধরা পড়ে। প্রতিষ্ঠান ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। কাস্টমস এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, প্রযোজ্য শুল্ককর ও অর্থদণ্ড পরিশোধ না করায় প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল খালাস বন্ধ ও বিআইএন লক করা হয়েছে। তাছাড়া রাজস্ব পরিশোধ না করা পর্যন্ত পরবর্তী ছাড়পত্র ছাড়া গোল্ডেন থ্রেড লিমিটেড ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বা একই মালিকের যেকোনো প্রতিষ্ঠান স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর, কাস্টম হাউস বা শুল্ক স্টেশনে প্রতিষ্ঠানের সব কাঁচামাল খালাস বন্ধ ও সেবা সরবরাহ স্থগিত রাখতে সব কাস্টম হাউস ও ভ্যাট কমিশনারেটকে অনুরোধ করা হয়।

চালানটি খালাসের দায়িত্বে ছিল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট। গোল্ডেন থ্রেড লিমিটেডের বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভুক্ত না থাকা সত্তে¡ও কীভাবে কাগজ টেম্পারিং করে একটি পণ্য বন্ড সুবিধায় খালাস নেয়া হয়েছেÑএমন প্রশ্নে সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী দায় এড়িয়ে গেছেন। অবশ্য তারও কথা পর্যালোচনার দাবি রাখে। যেমনÑকাঁচামাল খালাসের সময় বন্ড প্রতিষ্ঠান কি না, কাস্টমস কেন তা দেখেনি?  সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান টেম্পারিং করেছে, চুরি করেছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান কাগজ টেম্পারিং করেছে কি না, ওই প্রতিষ্ঠান সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানকে যেভাবে ডকুমেন্ট দিয়েছে, সেভাবে তারা পেশ করেছে। ব্যাংকের ডকুমেন্টে পণ্য, এইচএস কোড সব লেখা রয়েছে। এটি মানতে হবে কাস্টমসের উদাসীনতা রয়েছে। অন্য পক্ষ দোষ করছে। কাস্টমস কী করেছে!  কাস্টমস সব প্রমাণপত্র যাছাই করলে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আগেই অনিয়ম ধরা পড়ত। অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছাড়া হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেয়া সম্ভব নয়। কর ফাঁকি, অর্থ পাচার যা-ই ঘটুক না কেন এসব অপরাধ রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০