রতন কুমার দাস: বাংলাদেশের ইস্পাতশিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে ইস্পাত প্রস্ততকারকরা সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সেরা পণ্য উৎপাদন করে আসছে। গ্রাহকরাও পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কে সজাগ। দেশের ইস্পাতশিল্পের এ অবস্থানে আসার পেছনে বন্দর স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজের বেশ ভূমিকা রয়েছে। মজবুত দেশ গড়ার প্রত্যয় নিতে এগিয়ে চলেছে ওই প্রতিষ্ঠান। সঠিক দামে, সঠিক মানের পণ্য বিপণন করে আসছে তারা।বাংলাদেশের ইস্পাতশিল্পে নামকরা প্রতিষ্ঠান বন্দর স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি বিএসআই নামে পরিচিত। ইস্পাত প্রস্তুতকারক হিসেবে এর সুনাম রয়েছে বেশ। প্রতিষ্ঠানটি এমএস ডিফরমড বার উৎপাদন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এর করপোরেট অফিস রাজধানীতে। কারখানা নারায়ণগঞ্জের মদনপুরে। অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহৃত হয় প্রতিষ্ঠানটির সব পণ্য।ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্পে উৎপাদিত পণ্য সরবরাহ করেছে বিএসআই। এর মধ্যে রয়েছে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের বর্ধিত ভবন, শেখ সাহেরা খাতুন মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল, হাতিরঝিল এক্সটেনশন ব্রিজ, মনিপুরী স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় ভবন, কুড়িল ফ্লাইওভারের বর্ধিত অংশ, বুয়েটের বর্ধিত ভবন, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বর্ধিত শাখা, নটর ডেম কলেজের বর্ধিত ভবন, ভোলার মায়া সেতু, রংপুরের মধুমতি সেতু, টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, কেরানীগঞ্জ জেলখানা নতুন ভবন, বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনের বর্ধিত অংশসহ অনেকসরকারি-বেসরকারি ভবন।২০০২ সালে পথচলা শুরু করে বন্দর স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ। বর্তমানে এখানে প্রায় এক হাজার মানুষ কর্মরত। বিশ্বমানের পণ্য তৈরি ও সেবা দিতে তারা অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পণ্যের মানোন্নয়নে তারা সর্বোচ্চ শ্রম দিয়ে থাকেন।কর্মীবান্ধব হিসেবে সুনাম রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। কর্মীদের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট বিএসআই। তাদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ উপহার দিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে। সব কর্মীর জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা বরাদ্দ রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। কর্মী নিয়োগ হতে শুরু করে প্রশিক্ষণ, পদোন্নতি প্রভৃতিতে কোনো কার্পণ্য করে না। নিয়মিত সব কর্মীর জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে। কর্মক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) নীতিমালা অনুসরণ করে থাকে বন্দর স্টিল।মানসম্পন্ন ইস্পাতের গুণাবলী, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ইস্পাতের ভ‚মিকা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে প্রায়ই কর্মশালার আয়োজন করে থাকে বন্দর স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ। শিক্ষা খাতের উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কারিগরি উন্নয়নে সাহায্য-সহযোগিতা করে থাকে তারা। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণোদনামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করে।
পণ্যস ডিফরমড এমএস বার ৪০ গ্রেড/৩০০ ডব্লিউ, ৬০ গ্রেড/৪০০ ডব্লিউ, ৫০০ ডব্লিউ। আট মিমি থেকে ৩২ মিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে এর আকার। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী এ ধরনের বার তৈরি করে বিএসআই।স এমএস বিলেট ৪০ গ্রেড, ৬০ গ্রেড, টিএমটি।স প্লেইন বার ৪০ গ্রেড। পাঁচ মিমি থেকে ৩২ মিমি। ক্রেতার চাহিদা মোতাবেক তৈরি করা হয় প্লেইন বার
স্ট্রেংথভালো রডের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ইল্ড স্ট্রেংথ। এর মাধ্যমে রডের চাপ সহ্য করার ক্ষমতা বোঝা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, যে রডে ইল্ড স্ট্রেংথ বেশি, সেই রড উন্নত মানের। একটি ভালো রডে ৫০০ এমপিএ বা ৭২৫০০ পিএসআই ইল্ড স্ট্রেংথ থাকে।বিএসআই উৎপাদিত ৩০০ গ্রেড রডের ইল্ড স্ট্রেংথ ৩০০ এমপিএ। এর টেনসাইল স্ট্রেংথ ৩৩০ এমপিএ। ৪০০ গ্রেডের বেলায় ইল্ড স্ট্রেংথ ৪০০ ও টেনসাইল স্ট্রেংথ ৪৪০ এমপিএ। আর ৫০০ গ্রেডের ক্ষেত্রে ইল্ড স্ট্রেংথ ৫০০ ও টেনসাইল স্ট্রেংথ ৫৫০ এমপি।বন্দর স্টিলের সব পণ্য তাদের নিজস্ব পরীক্ষায় উতরে গেছে শতভাগ। একই সঙ্গে বিএসটিআই, বুয়েট, কুয়েট ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত তাদের পণ্যগুলো। যুক্তরাজ্য থেকে এর ফ্যাটিগ পরীক্ষিত।বিএসআই স্ট্যান্ডার্ড টিএমটি ৫০০ ডব্লিউ ব্র্যান্ডের কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে স অত্যধিক তাপ সহ্য করতে পারেস সহজে ক্ষয় হয় নাস ৫০ লাখ সাইক্লিক লোডিংয়ে ভূমিকম্প সহনীয়স কার্বন কনটেন্ট মাত্র ০.২ শতাংশ। ঝালাইয়ে কোনো সমস্যা হয় না।
পরিচালনা পর্ষদবন্দর স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন মো. সিরাজুল ইসলাম। ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে রয়েছেন মো. আবুল কালাম। পরিচালনা পর্ষদে আরও রয়েছেন মো. হারুন-অর-রশিদ, মো. কামরুল ইসলাম পাপ্পু, মিসেস সাবিনা ইয়াসমিন, আলহাজ মো. আখতার হোসেন খান, শরিফ আহমেদ ওমো. কাওসার আহমেদ।
‘আধুনিক সভ্যতা বিনির্মাণে অন্যতম অনুষঙ্গ ইস্পাত। বাংলাদেশের ইস্পাতশিল্পে বিপ্লব চলছে। আমরা এর অংশীদার হতে পেরে গর্বিত। গ্রাহক সন্তুষ্টিই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। তাদের গুণগত মানে সেরা পণ্য উপহার দিতে তৎপর আমরা। এ মান বজায় রেখে দেশের সেরা ইস্পাত প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে চাই।’মো. সিরাজুল ইসলাম, চেয়ারম্যান
