আজহার উদ্দিন শিমুল: দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশ হিসেবে পরিচিত সিলেট। জেলাটিতে রয়েছে অনেক পর্যটন কেন্দ্র। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে জাফলং। প্রকৃতি যেন আপন খেয়ালে অপরূপ করে তুলেছে জাফলংকে। স্থানটি সম্পর্কে এমনই জানতাম। তাই এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে উদগ্রীব হয়ে পড়ি আমরা তিন বন্ধু।
গত সপ্তাহে বন্ধু ইসতিয়াক আহমেদ শাকিব ও স্বর্ণালী আক্তার সনিকে সঙ্গী করে রওনা দিই জাফলংয়ের উদ্দেশে। বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি থাকার দরুণ ঘুরে বেড়ানোর এ সুযোগ লুফে নেয় বন্ধুরা। জাফলং পর্যটনকেন্দ্রটি সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত। সিলেট শহর থেকে ৬০ কি.মি. দূরে ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষে খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে জাফলংয়ের অবস্থান। মূলত পিয়াইন নদীর অববাহিকায় জাফলং অবস্থিত।
সিলেট থেকে মাইক্রোবাস, বাস, সিএনজি অটোরিকশায় যাওয়া যায় জাফলংয়ে। আমরা বাসে চড়ে জাফলং পৌঁছাই সেদিন। জনপ্রতি ৬০ টাকা ভাড়া। এক ঘণ্টা পরপর বিভিন্ন পরিবহনের বাস জাফলংয়ের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। যাওয়ার পথে অনেক মজা করি। আসলে সেদিন আমাদের সহযাত্রীদের মধ্যে অনেকেই বেড়াতে যাচ্ছিলেন জাফলং। অনেক পর্যটককে দলবেঁধে মাইক্রোবাসে চড়ে যেতে দেখি। এক্ষেত্রে ভাড়া পড়ে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা। সিএনজি অটোরিকশার বেলায় ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। সিলেট শহরের যে কোনো অটোরিকশা বা মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড থেকে গাড়ি রিজার্ভ করেও যেতে পারেন জাফলংয়ে। জাফলংমুখী বাস ছাড়ে নগরীর সোবহানীঘাট থেকে।
জাফলংয়ে গিয়ে প্রথমেই চোখে পড়লো চা বাগান থেকে পাতা আহরণের দৃশ্য। ওখান থেকে হেঁটে পিয়াইন নদীর তীরে পৌঁছাই। জাফলংয়ের স্বচ্ছ পানি ভীষণ আন্দোলিত করে আমাদের। পানিতে নেমে পড়ি। স্বচ্ছ পানিতে পা দেখে বেশ মজা পাই তখন। তবে হাঁটা কিংবা গোসলের সময় সতর্ক ছিলাম আমরা। কেননা, পানির নিচে থাকা পাথরগুলো পিচ্ছিল থাকে। এখন বর্ষা মৌসুম। পানির স্রোতও বেশি। এ কারণে দেখেশুনে পানিতে পা ফেলতে হয়।
পাহাড়ি এলাকাটি সবুজ অরণ্যে ঘেরা। এখানে অনেক বন্যপ্রাণী রয়েছে। ছোট-বড় অনেকগুলো ঝরনা আছে। ঝরনাগুলোই পর্যটকদের বেশি আকৃষ্ট করে। জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট হাঁটলেই ঝরনার দেখা মেলে। আমাদের সৌভাগ্য বলতে হবে, কেননা বর্ষায় জাফলংয়ের ঝরনাগুলো অপরূপ রূপে সেজেছিল সেদিন।
জাফলংয়ে জেলা পরিষদের বাংলো ছাড়া থাকার তেমন ভালো ব্যবস্থা নেই। পর্যটকদের থাকতে হয় সিলেট শহরে। তাই সিলেটে ফিরে আসি সন্ধ্যা হওয়ার আগে। চাইলে জাফলং জেলা পরিষদে থাকতে পারেন। এজন্য ফোনে রিসোর্টটি বুকিং দিতে পারবেন।
Add Comment