নিজস্ব প্রতিবেদক : গত কয়েক মাসে তিন দফা বন্যায় এক হাজার ৩২৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ৮২ কোটি ৫৪ লাখ টাকার পুনর্বাসন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এ তথ্য জানান। এবারের বন্যায় ১২ লাখ ৭২ হাজার ১৫১ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলেও জানান মন্ত্রী।
গতকাল বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি। কৃষিমন্ত্রী বলেন, এ বছর বন্যার পূর্বাভাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয় ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাসহ সবাই ছিলেন সতর্ক। ফসলের ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য কৃষককে দেওয়া হয়েছিল প্রয়োজনীয় পরামর্শ।
তিনি জানান, এবার ৩২ হাজার ২১৩ হেক্টর জমির ৩৩৪ কোটি টাকার আউশ ধান, ৭০ হাজার ৮২০ হেক্টর জমির ৩৮০ কোটি টাকার আমন ধান এবং সাত হাজার ৯১৮ হেক্টর জমির আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ২৩৫ কোটি টাকার সবজি এবং ২১১ কোটি টাকার পাটের ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী।
তিন দফার বন্যায় ৩৭টি জেলায় সব মিলিয়ে এক হাজার ৩২৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। দুই লাখ ৫৭ হাজার ১৪৮ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে এক লাখ ৫৮ হাজার ৮১৪ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী জানান, ইতোমধ্যে কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচি হিসেবে দুই লাখ ৩৯ হাজার ৬৩১ জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মধ্যে প্রায় ১৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বিতরণ শুরু হয়েছে। আরও প্রায় ৬৫ কোটি টাকার কর্মসূচি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ অর্থ দিয়ে ৯ লাখ ২৯ হাজার ১৯৪ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে গম, সরষে, চিনাবাদাম, সূর্যমুখী, খেসারি, পেঁয়াজ, মরিচ, টমেটো ইত্যাদি ফসল আবাদের জন্য বিনা মূল্যে কৃষি উপকরণ সরবরাহ করা হবে।
মন্ত্রী জানান, ১৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষকদের মধ্যে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি বিভিন্ন সবজি চাষের জন্য বিনা মূল্যে বীজ বিতরণ, কমিউনিটিভিত্তিক বীজতলা তৈরির মাধ্যমে চারা উৎপাদন ও বিনা মূল্যে বিতরণ, ভাসমান বেডে ধানের চারা উৎপাদন ও বিনা মূল্যে বিতরণ, রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে রোপণের জন্য ট্রেতে নাবী জাতের আমন ধানের চারা উৎপাদন ও বিনা মূল্যে বিতরণ এবং মাষকলাই বীজ ও সার বিনা মূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে।
প্রতি বছরই বর্ষায় খরিপ-১ ও খরিপ-২ মৌসুমে অতিঝড়, বন্যা, পাহাড়ি ঢলের কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন ধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।