নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি মৌসুমে বন্যার্তদের চিকিৎসার জন্য ৬১৯টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোর জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ ও অর্থ সহায়তার ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেছেন, কিছু অতিরিক্ত বরাদ্দ রাখা হয়েছে, চাহিদা পাওয়ামাত্র তা সরবরাহ করা হচ্ছে।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির তথ্য তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, চলমান দ্বিতীয় দফার বন্যায় ১৮ জেলার ২০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা মানুষের জন্য প্রায় তিন হাজার আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৪০ হাজার লোক আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার্তদের চিকিৎসার জন্য ৬১৯টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিং করেছি। এখানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে তাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে অবগত হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোয় কীভাবে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়, সে সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। উজান থেকে নেমে আসা ঢল আর ভারী বৃষ্টিতে এ বছর দুই দফা বন্যার কবলে পড়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। উত্তর-পূর্বে সিলেট ও সুনামগঞ্জ এবং উত্তরে গাইবান্ধা, রংপুর ও কুড়িগ্রামে এখনও বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম দফায় বন্যার সময় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা সিলেট অঞ্চলে পরিদর্শন করেছিলাম। তখন প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয় দফায় বন্যার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। এখন দ্বিতীয় দফায় বন্যা চলছে। এখন দুর্যোগ কার্যালয় থেকে তথ্য পাচ্ছি যে, আরেকটি বন্যা আসতে পারে। বাংলাদেশ দুর্যোগপ্রবণ দেশ। আমরা সব সময় দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকি।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বন্যাদুর্গতদের সহায়তা দিতে এ পর্যন্ত ১৮ জেলায় ২১ হাজার ৭০০ টন চাল, নগদ পাঁচ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, ৬৫ হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনা ও অন্যান্য খাবার, গো-খাদ্য বাবদ ৪০ লাখ টাকা এবং শিশুখাদ্যের জন্য ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া সিলেট-৩, সুনামগঞ্জ-১ ও মৌলভীবাজার-২ সংসদীয় আসনে দুই হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনা ও অন্যান্য খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধানে নদীগুলো ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এর মধ্যে একটা রয়েছে তিস্তা নদীর ড্রেজিং। এ ব্যাপারে চীন ও ভারত আমাদের সহায়তা করতে চাচ্ছে। চীন ফিজিবিলিটি স্টাডি করেছে। এমনকি ভারত ও চীন একসঙ্গে কাজ করতে চাচ্ছে। আমাদের দরকার অর্থায়ন। যাকে দিয়ে কাজ করালে দেশের ভালো হয়, প্রধানমন্ত্রী তাকে দিয়েই এই প্রকল্প করবেন।’