নিজস্ব প্রতিবেদক: কয়েকদিন বৃষ্টি কম হওয়ায় দেশের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। এখন আবার নতুন করে উজানে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে সিলেট, সুনামগঞ্জেও ভারী বৃষ্টি হওয়ায় আবার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। ভারী বৃষ্টিতে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও পদ্মাসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদনদীগুলোর পানি বাড়ছে। এদিকে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদনদীর পানি সময় বিশেষে দ্রুত বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও পদ্মা নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুশিয়ারা ছাড়া দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদনদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল ও ভারতের উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এই অঞ্চলের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদনদীগুলোর পানি সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদী ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, তাদের পর্যবেক্ষণাধীন পানি সমতল স্টেশন আছে ১০৯টি। এর মধ্যে পানি বেড়েছে ৬১টি স্টেশনের, কমেছে ৪৬টির। আর অপরিবর্তিত আছে ২টির। এদিকে বিপৎসীমার ওপরে আছে এখন একটি স্টেশনের পানি। এতে বন্যা কবলিত জেলার সংখ্যাও এখন একটি।
বর্তমানে নেত্রকোনার কমলাকান্দার সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ মিটার ওপর দিয়ে বইছে। এছাড়া তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে ওঠার শঙ্কা রয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশে মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ সহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর, ময়মনসিংহ ও
সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায়? অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে সুনামগঞ্জের লরেরগড়ে ১৩৭ মিলিমিটার। এছাড়া জাফলংয়ে ১১৫, সুনামগঞ্জের মহেশখোলায় ৮২, পঞ্চগড়ে ৭৪, সুনামগঞ্জে ৬৪, নেত্রকোনায় ৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হয়েছে ২৫৬ মিলিমিটার। এছাড়া অরুণাচলে ১০৬, জলপাইগুড়িতে ১০০ এবং আসামে ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।