Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 4:32 pm

বরখাস্তের পরও ওয়েবসাইট আছে শিক্ষকের প্রোফাইল

প্রতিনিধি ,জাবি: চাকরি থেকে বরখাস্তের বিশ দিন পেরোলেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সরানো হয়নি বহিষ্কৃত শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির প্রোফাইল। ওয়েবসাইট ভিজিটিং করে দেখা যায় পাবলিক হেলথ্ এন্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের ওয়েবসাইটে অনুষদের শিক্ষকদের তালিকায় এখানো নিজের নামে প্রোফাইল চালু রয়েছে বহিষ্কৃত এ শিক্ষকের।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি যৌন নিপীড়নের অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনিকে বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঐদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. আবু হাসান বলেন, “বরখাস্তের চিঠির মূল কপি ঐ শিক্ষকে দেওয়া হয়েছে এবং একই সাথে চিঠির অনুলিপি সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান এবং একাউন্টিং বিভাগে দেওয়া হয়েছে। তবে তার প্রোফাইল এখনো কেন সরানো হয়নি তা খতিয়ে দেখা হবে এবং শীঘ্রই ওয়েবসাইট থেকে সরানো হবে।”
তার বরখাস্তের অফিশিয়াল নোটিশ কেন দেওয়া হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে রেজিস্ট্রার বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পূর্বে যাদেরকে বরখাস্ত হয়েছে তাদের কাউকেই অফিশিয়াল নোটিশ দেওয়া হয়নি। এজন্য তার বিষয়েও কোনো অফিশিয়াল নোটিশ দেওয়া হবে না। কারণ অফিশিয়াল নোটিশ একটি আইনী প্রমাণ হিসেবে থাকে। যার কারণে বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক আইনের আশ্রয় নিতে পারেন বা অভিযোগ করতে পারেন যে ব্যাক্তিগতভাবে তাকে হেনস্তা করা হচ্ছে।”

এর আগে ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর মাহমুদুর রহমান জনি ও একই বিভাগে নিয়োগ পাওয়া প্রভাষক আনিকা বুশরা বৈচির একটি অন্তরঙ্গ ছবি (সেলফি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে পোস্টারিং করা হয়। যেখানে বলা হয়, এভাবেই ললিপপের ভেল্কিতে শিক্ষিকা হলেন আনিকা বুশরা বৈচি। একই সঙ্গে বিভাগের শিক্ষক পদে আবেদনকারী ৪৩ ব্যাচের এক ছাত্রীর সঙ্গে অন্তর‌ঙ্গ কথাবার্তার অডিও প্রকাশ্যে আসে। যেখানে মাহমুদুর রহমান জনি ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক গর্ভপাত করান। এছাড়া, জনির সঙ্গে ছাত্রলীগের একাধিক নেত্রীর ‘অনৈতিক’ সম্পর্ক স্থাপন এবং ‘অশালীন’ চ্যাটিংয়ের ছবি ও তথ্য সামনে আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জনির বিচারের দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ। পরে ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর একাধিক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে জনির বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তখন ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এ সময় জনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন। কিন্তু এরপরও জনির বিচার নিয়ে শুরু হয় কালক্ষেপণ। পরে ২০ ফেব্রুয়ারির সিদ্ধান্তে তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়।