আরিফ হোসেন, বরিশাল: দক্ষিণাঞ্চলের উৎপাদিত চালের মান অক্ষুণœ রেখে সর্বাধুনিক উপায়ে সংরক্ষণের জন্য এবার বরিশালে নির্মাণ হচ্ছে সর্বাধুনিক সাইলো। বরিশাল শহরের ঐতিবাহী ৩০ গোডাউনের নদীর সংলগ্ন এলাকায় ৫২০ শতাংশ জমির ওপর ৩১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য এ সাইলোতে একসঙ্গে তিন বছরের জন্য সংরক্ষণ করা যাবে প্রায় ৫ কোটি কেজি চাল। যে কোনো দুর্যোগে খাদ্য সংকট মোকাবিলায় যা হবে বড় সহায়ক। বরিশাল বিভাগের ছয় জেলাসহ দক্ষিণ উপকূলের মানুষের খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকার দীর্ঘদিন মজুদ রাখার উপযোগী আধুনিক ও উন্নতমানের খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ করছে।
নির্মাণকাজের সংশ্লিষ্টদের মতে, এ সংরক্ষণাগারে একসঙ্গে ৪৮ হাজার মেট্রিক টন চাল মজুদ রাখা সম্ভব। পৃথক পৃথক ১৬টি বিনের মাধ্যমে প্রতিটি বিনে তিন হাজার মেট্রিক টন চাল ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন হবে এটি। এ সাইলো পাইল, ফাউন্ডেশন করে স্টিল স্টাকচার হবে। নদী ও সড়কপথে চাল এলে তা জেটি থেকে কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে অটোমোশনে সংরক্ষণাগারে আসবে এবং এক একটি বিনে গিয়ে মজুদ হবে।
গত বছরের ২২ জুন সাইলোর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে; যা শেষ হবে ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট। সূত্রমতে, দ্রুতগতিতে চলছে এর নির্মাণকাজ। এখন চলছে প্রাথমিক পাইলের কাজ। পাইলের কাজ শেষ হলে ফাউন্ডেশন করে স্ট্রাকচার নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান।
খাদ্য বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় স্থানীয় পদ্ধতিতে প্রায় ৯০ হাজার টন খাদ্য মজুদের ব্যবস্থা রয়েছে। অত্যাধুনিক খাদ্য মজুদের ক্ষেত্রে সাইলো হবে বাড়তি শক্তি।
খরা-ঝড়-বন্যা-জলোচ্ছ্বাসের পর ক্ষেতে ফসল ওঠা পর্যন্ত এ সাইলোর মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবেÑ জানিয়েছেন খাদ্য অধিদপ্তরের কারিগরি বিশেষজ্ঞ আবুল কালাম আযাদ।
বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে নির্মিত এ আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার (সাইলো) নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে জয়েন্টভেঞ্চার অব কনফিডেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড বাংলাদেশ এবং দি জিএসআই গ্রুপ এলএলসি, ইউএসএ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
দেশে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য ৮টি সাইলোর মধ্যে বরিশাল হচ্ছে চতুর্থ। ইতোমধ্যে আশুগঞ্জ, মধুপুর ও ময়মনসিংহে সাইলো প্রকল্পের কাজ সমাপ্তির পথে রয়েছে। এটি সম্পূর্ণভাবে পরিবেশবান্ধব হচ্ছে বলে দাবি করেছেন সাইলো প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. মাসুদ রানা।
সাইলো নির্মাণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা যাতে নিশ্চিত করা হয় এমন দাবি করেছেন স্থানীয় জনসাধরণ।