প্রতিনিধি, কুমিল্লা: কুমিল্লায় ধনেপাতা চাষে অনেক কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষকরা লাভজনক ধনেপাতা চাষের মাধ্যমে ফিরে পাচ্ছেন আর্থিক সচ্ছলতাও। জেলার বরুড়া উপজেলায় উৎপাদিত ধনেপাতা এখানকার হাটবাজারের চাহিদা মিটিয়ে নগরীর বিভিন্ন হাটবাজারেও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
উপজেলার হরিপুর ও কালির বাজার এলাকার কৃষকরা ধনেপাতা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। উর্বর পলিমাটিতে ধনেপাতা চাষে বেশ সফলতা পাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। উর্বর পলিমাটিতে খুবই দ্রুত বেড়ে ওঠে ধনেপাতা গাছ।
হরিপুর এলাকায় কামাল হোসেন নামের এক ধনেপাতা চাষি জানান, ধনেপাতা চাষ অত্যন্ত লাভজনক একটি চাষ। এটির চাষাবাদের ফল বেশ দ্রুতই পাওয়া যায়। নিজের ২০ শতক জায়গায় তিনি ধনেপাতা চাষ করেছেন। এছাড়া প্রায় ৩৫ শতক জায়গায় করা একটি ধনেপাতার ক্ষেত অন্যের কাছ থেকে কেনেন ৪০ হাজার টাকায়। বর্তমানে ধনেপাতার বাজারমূল্য প্রতিকেজি ৬০-৭০ টাকা বলেও তিনি জানান।
জানা যায়, ধনিয়ার পাতা মসলা বা খাদ্য সুগন্ধিকারক হিসেবে বিভিন্ন দেশে ব্যবহার করা হয়। এ দেশের মতো ভারত, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ফ্লোরিডা, হাওয়াই প্রভৃতি দেশেও রান্নার মসলা হিসেবে ধনিয়া বহুলভাবে ব্যবহƒত হয়। সাধারণত এর কাঁচা পাতা ব্যবহার হয়। শুকালে এর পাতার তীব্র সুগন্ধ নষ্ট হয় না। ধনিয়া যে শুধু রান্নাকে সুগন্ধময় ও সুস্বাদু করে তা-ই নয়, এর ভেষজ মূল্যও আছে। জ্বর, হাইপার টেনশন, অ্যাজমা, পাকস্থলীর জ্বালাপোড়া, কৃমি, সাপে কামড়ানো, ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়া প্রভৃতি রোগের চিকিৎসায় ধনেপাতা সফলভাবে ব্যবহƒত হয়ে আসছে।
পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, ধনেপাতায় রয়েছে ১১ জাতের এসেনশিয়াল অয়েল, ছয় ধরনের অ্যাসিড, ভিটামিন, মিনারেল ও অন্যান্য ফাইবার, ম্যাংগানিজ, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-কে, ফসফরাস, ক্লোরিন ও প্রোটিন। এই উদ্ভিদ অ্যান্টিসেপ্টিক, অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং যেকোনো চুলকানি ও চামড়ার জ্বলনে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ।
এ বিষয়ে বরুড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানান, ধনেপাতা চাষ একটি লাভজনক, নিত্যপ্রয়োজনীয় ও চাহিদাপূর্ণ একটি উপাদান। প্রতিটি পরিবারে তরিতরকারি রান্নার কুাজে এটি অবশ্যই ব্যবহƒত হয়ে থাকে। এটির চাষাবাদে প্রাথমিক অবস্থায় অতিরিক্ত বৃষ্টি ও পানি থেকে রক্ষা করলেই হয়। বরুড়ার বিভিন্ন এলাকায় ধনেপাতা চাষে কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছেন।