বর্ষাকালে চোখের নানা অসুখ বাড়ে। এর মধ্যে বেশি প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় কনজাংকটিভাইটিস নামের চোখের রোগের। এই রোগ ছোঁয়াচে এবং দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এজন্য একটু সতর্ক হওয়া দরকার।
লক্ষণ: এই রোগের লক্ষণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোÑচোখের নিচের অংশ লাল হয়ে চোখে ব্যথা; প্রথমে এক চোখে, পরে অন্য চোখে ছড়িয়ে পড়া; চোখ থেকে ক্রমাগতভাবে পানি পড়া; চোখের নিচের অংশ ফুলে লাল হয়ে যাওয়া; চোখ জ্বলা ও চুলকানো; আলোয় চোখে কষ্ট হওয়া প্রভৃতি।
রোগটি ছোঁয়াচে: কনজাংকটিভাইটিস রোগের ভাইরাস বাতাসে থাকে। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির চারপাশে যারা থাকেন, তারাও এই অসুখে আক্রান্ত হন।
চিকিৎসা ও করণীয়: চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ চোখে দিলে এই রোগ থেকে ভালো হওয়া যায়। তবে প্রতিরোধে কিছু ব্যবস্থা নেয়া যায়। যেমন: সব সময় হাত-পা ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে এই করোনাকালে হ্যান্ড স্যানিটাইজ করে সচেতন থাকুন। কোনো কারণে চোখ ভেজা থাকলে চোখ টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে নিন এবং টিস্যু পেপারটি অবশ্যই ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিন। নইলে ব্যবহার করা টিস্যু পেপার থেকে সংক্রমণ ঘটতে পারে। চশমা ব্যবহার করুন। এতে চোখে ভুলবশত হাত লেগে যাওয়া এবং ধুলো ও ধোঁয়ার সংস্পর্শ থেকে বাঁচা যাবে। নিজের ব্যবহার করা প্রসাধনসামগ্রী অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেয়া যাবে না, বা অন্যের ব্যবহƒত প্রসাধনসামগ্রী নিজে ব্যবহার করা যাবে না। চোখ ঘষে চুলকানো যাবে না। অন্য কারও আই ড্রপ ব্যবহার করা উচিত হবে না। এতে ফের কনজাংকটিভাইটিস হতে পারে। সম্ভব হলে আলাদা বাথরুম ব্যবহার করুন। এতে রোগ থেকে যেমন মুক্তি পাওয়া যাবে, তেমনি অন্যরাও এ রোগ থেকে দূরে থাকবেন। করোনাভাইরাসজনিত রোগের (কভিড) সময় পরিবার ও নিজেকে সতর্ক ও সচেতন রাখি। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
অধ্যাপক ডা. মো. নূরুল আলম
বিভাগীয় প্রধান, চক্ষুরোগ বিভাগ
আইচি হাসপাতাল, উত্তরা, ঢাকা