বর্ষায় রোগবালাই থেকে বাঁচার উপায়

টাইফয়েড, প্যারা-টাইফয়েড, ডায়রিয়া, জন্ডিস প্রভৃতি পানিবাহিত রোগ সাধারণত জীবাণুযুক্ত দূষিত খাওয়ার পানি ও জীবাণুযুক্ত খাবার থেকেই হয়ে থাকে। একটু সতর্ক হলে এসব রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়।

টাইফয়েড ও প্যারা-টাইফয়েড: সালমোনেলা টাইফি ও প্যারা-টাইফি নামক দুটি ব্যাকটেরিয়া থেকে এ দুটি রোগ হয়ে থাকে। রোগীরা সাধারণত জ্বর, পেটব্যথা, পায়খানার সমস্যা, মাথাব্যথা ইত্যাদি সমস্যা নিয়ে আসেন। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না পেলে পায়খানার সঙ্গে রক্তপাত এমনকি নাড়ি ফুটো হয়ে রোগীর জীবনও বিপন্ন হতে পারে। উচ্চমাত্রার জ্বর পাঁচ-সাত দিনের বেশি হলে অবশ্যই পরীক্ষা করতে হবে।

ডায়রিয়া: নানা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও প্রোটোজোয়া দিয়ে ডায়রিয়া হয়ে থাকে। রোগীর পাতলা পায়খানার সঙ্গে বমি, পেটব্যথা এমনকি জ্বরও হতে পারে। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা করা না গেলে পানিশূন্যতা ও কিডনি ফেইলিউরের মতো মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে।

জন্ডিস: হেপাটাইটিস ‘এ’ এবং হেপাটাইটিস ‘ই’ পানিবাহিত বা খাবারবাহিত ভাইরাস দিয়ে জন্ডিস হতে পারে। সাধারণত রোগীর চোখ ও শরীর হলুদ হয়। প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ হয়। খাবারে অনীহা, বমি ভাব, বমি, পেটব্যথা ইত্যাদি সমস্যাও দেখা দিতে পারে। কখনও কখনও রক্তপাত, পেটে পানি আসা, এমনকি রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।

রোগ প্রতিরোধে করণীয়: খাবার পানি অবশ্যই বিশুদ্ধ ও জীবাণুমুক্ত হতে হবে। বিশুদ্ধ পানির সহজ উপায় পানি ফুটিয়ে পান করা। ফোটানোর সুযোগ না থাকলে ফিটকিরি ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ব্যবহার করা যেতে পারে। বাজারের ভালো মানের মিনারেল ওয়াটার বিকল্প হতে পারে।

খোলা পানি বা শরবত অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে। খাবার তৈরি, পরিবেশন ও গ্রহণÑসব পর্যায়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কোনোভাবেই বাসি খাবার খাওয়া যাবে না। খাবার ঠিকমতো গরম করে খেতে হবে। বাইরের বিশেষ করে খোলা খাবার খাওয়া যাবে না। সর্বোপরি ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার কোনো বিকল্প নেই।

খাবার গ্রহণের আগে ও টয়লেট ব্যবহারের পরে অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। রোগ হলে অবশ্যই কাছের রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালে যেতে হবে।

ডা. মোহাম্মদ জাকির হোসেন, পরিপাকতন্ত্র, লিভার ও প্যানক্রিয়াস রোগ বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০