বলেছিলেন খনা

বলেছিলেন খনা
আমের বছর বান
কাঁঠালের বছর ধান

অর্থাৎ, আম বেশি হলে ঝড়-তুফান বেশি হয়। যে বছর কাঁঠাল বেশি হয়, সে বছর ধান বেশি জন্মে।

গো নারিকেল নেড়ে রো
আম টুকুরে কাঁঠাল ভো

অর্থাৎ, সুপারি ও নারিকেলের চারা নেড়ে পুঁতলে গাছ সবল ও ফলবান হয়। আমের চারা নেড়ে পুঁতলে ফল ছোট হয়। আর কাঁঠালের চারা নেড়ে পুঁতলে সাধারণত ফলই হয় না। ফল হলেও তাতে কোষ হয় না, কিংবা ভোঁতাসার হয়।

আট চার গুয়ো
আম নাড়ায় টুকটুকি কাঁঠাল নাড়ায় ভুও
তিন নাড়ায় গুয়ো দুয়ো, তিনে খাঁটি, আগে কাট কুও

অর্থাৎ, প্রথম আট হাত অন্তর সুপারি লাগানো এক সার পর ফাঁকে, অর্থাৎ চার হাত দূরে আরেক দফা ছোট চারা রোপণ করে দিতে হবে। তৃতীয় সারে দুই হাত দূরে আবার আরেক দফা লাগাতে হয়। তখন সুপারি বাগ খাঁটি অর্থাৎ পূর্ণ হয়।

পাদটীকা
জ্যোতিষশাস্ত্রে নিপুণ ও বচন রচয়িতা বিদুষী নারী খনা। অনুমান করা হয়, তার আবির্ভাবকাল ৮০০ থেকে ১২০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে। তার ব্যক্তিগত পরিচয় কিংবদন্তিনির্ভর এবং সেক্ষেত্রেও দ্বিমত রয়েছে। জনশ্রুতি রয়েছে, তার নিবাস ছিল পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশপরগনা জেলার বারাসাতের দেউলি গ্রামে। বাবার নাম অনাচার্য। চন্দ্রকেতু রাজার আশ্রম চন্দ্রপুরে তিনি বহুকাল বাস করেন।
জনশ্রুতি অনুসারে তিনি ছিলেন সিংহলরাজের কন্যা। শুভক্ষণে জন্মলাভ করায় তার নাম রাখা হয় ক্ষণা বা খনা। তিনি বিক্রমাদিত্যের সভার প্রখ্যাত জ্যোতির্বিদ বরাহপুত্র মিহিরের জন্মের পর গণনা করে দেখা যায় যে, তার আয়ু মাত্র এক বছর। তাই ছেলেকে তিনি একটি পাত্রে রেখে সমুদ্রের জলে ভাসিয়ে দেন। পাত্রটি ভাসতে ভাসতে সিংহল দ্বীপে পৌঁছায়। সিংহলরাজ শিশুটিকে নিয়ে লালন-পালন করেন এবং বয়ঃক্রমকালে খনার সঙ্গে তার বিয়ে দেন। মিহির ও খনা উভয়েই জ্যোতিষশাস্ত্রে পারদর্শিতা অর্জন করেন। অতঃপর মিহির সস্ত্রীক জন্মভূমিতে ফিরে বাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং পরবর্তীকালে তারা একসঙ্গে বসবাস করতে থাকেন।
তথ্যসূত্র: বাংলাপিডিয়া

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০