প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর গতকাল শনিবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগামীকাল (আজ) রোববার থেকে ১১ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নুরউদ্দিন স্বাক্ষরিত ওই আদেশে সকাল ১০টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এ আদেশ প্রত্যাখ্যান করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রাখেন।
শিক্ষার্থীদের বেলা ১১টা পর্যন্ত হল থেকে বের হতে দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে বাধা উপেক্ষা করে আন্দোলনে যোগ দেন শিক্ষার্থীরা। তাদের একটাই দাবি ভিসির অপসারণ। টানা চার দিন আন্দোলন এবং তিন দিনের আমরণ অনশন কর্মসূচি চলছে তাদের। গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখে প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এ আন্দোলনে যুক্ত আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক সমাজ ১৬টি দাবিসংবলিত পত্র দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে।
গোবরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সফিকুর রহমান টুটুল বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব একটা আইন আছে। সেখানে যদি কোনো সমস্যার সৃষ্টি হয়, তা প্রক্টরিয়াল বডি দেখবে। এখানে কেন বহিরাগতরা বা ভিসির লোক এসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করবে?’ তিনি হামলাকারীদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগ করার কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. হুমায়ূন কবীর। তিনি বলেন, ‘আজ শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা করা হয়েছে, তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশে করা হয়েছে। এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। নৈতিকতার দিক বিবেচনা করে আমি আমার পদ থেকে পদত্যাগ করেছি।’
তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর কে বা কারা হামলা করেছে, তা আমার জানা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।’